ভুললে চলবে না কংগ্রেসের হাত ধরেই সারদা মামলা শুরু, কংগ্রেস হাত গুটিয়ে থাকবে না
বিজেপি চায় তৃণমূলকে চাপে ফেলতে আর তৃণমূল চাইছে নিজেদের রক্ষা করতে
- Total Shares
বাম আমলে শেষ লগ্নে এবং তৃণমূল আমলের একেবারে শুরুতেই ঘটে অর্থনৈতিক বিপর্যয়। সারদা সহ একাধিক চিটফান্ড সংস্থার কবলে পড়ে সাধারণ মানুষ সর্বশান্ত হয়ে পড়েন। সেই সময়ে রাজ্যব্যাপী প্রতারিত মানুষজন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। কিন্তু অচিরেই প্রকাশ হয় যে তাঁর দলের নেতা মন্ত্রীরাই এই চিটফান্ডগুলোর সঙ্গে জড়িত।
এর পরেই তৎপর হয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী।দ্রুত এই চিটফান্ডগুলোর মালিকদের পাকড়াও করতে উঠে পড়ে লাগে তৃণমূল সরকার। এর অপরাধী ধরার মূল উদ্দেশ্য ছিল নিজেকে ও নিজের দলকে আড়াল করা । রাজ্য পুলিশের দৌলতে সারদা চিটফান্ড এর কর্ণধার সুদীপ্ত সেন ও তার সহযোগীকে কিছু প্রমাণপত্র সহ কাশ্মীর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীরা শুরু করেন মিটিং-মিছিল-বিক্ষোভ। শুধু তাই নয়, আত্মহত্যার ঘটনাও দিনের পর দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে। এরপর পরিস্থিতির লাগাম টানতে এবং নিজেদের অপরাধ ধামাচাপা দিতে তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। সেই কমিটির মাথায় ছিলেন রাজীব কুমার। এছাড়া বিচারপতি (অবসরপ্রাপ্ত) শ্যামল সেনের নেতৃত্বে আরও একটি কমিশন গঠন করা হয়েছিল যে কমিটি প্রতারিত মানুষদের দ্রুত টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আসলে নিজেদের কুকীর্তি ধামাচাপা দিতে রাজকোষের অর্থ খরচ করতে থাকেন। যার সিংহভাগটাই অবশ্য কমিশনের লোকদের বেতনে খরচ হয় আর বাকিটা তুলে দেওয়া হয় কিছু ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীর হাতে।
এখন নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা চলছে [ছবি: পিটিআই]
মুখ্যমন্ত্রী তাঁর দলবলের এত বড় দুর্নীতি নিয়ে একটু মুখ খোলার চেষ্টা করে তাদের যথাযোগ্য শাস্তি বিধানের ব্যবস্থা করেন। এদের মধ্যে কেউ কেউ গ্রেফতার হন। আবার মুকুল রয়ের মতো অনেকেই দলত্যাগী।
বোধহয় এই পদক্ষেপগুলোর মধ্যে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী নিজেকে ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে আড়াল করতে চেয়েছিলেন।
কিন্তু এত কিছুর মধ্যে দিয়ে প্রকৃত দোষীদের প্রকাশ্যে আনতে বদ্ধপরিকর এই বাংলার কংগ্রেস। তারা বসে থাকার পাত্র নয়। সেই সময় বাংলার প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন বহরমপুরের সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী। ভুলে গেলে চলবে না, তাঁর সহযোগিতায় কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান চিটফান্ডকাণ্ডের এক সংস্থা সারদার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন। যার প্রকৃত উদ্দেশ্য ছিল সত্য উদ্ঘাটন দোষীদের শাস্তি এবং প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের টাকা ফেরতের ব্যবস্থা করা।
কিন্তু এর পর দোষীদের শাস্তি দেওয়াটা রাজনৈতিক খেলায় পর্যবসিত হল যার উদাহরণ আমরা সিবিআই বনাম কলকাতা পুলিশ লড়াইয়ের মধ্যে দেখতে পেলাম। কিন্তু আমানতকারীদের টাকা ফেরত পাওয়ার ব্যাপারটা কিন্তু পিছনের সারিতে চলে গেল।
এখন বিজেপি চায় একের পর গ্রেফতার করে তৃণমূলকে চাপে ফেলতে। আর তৃণমূল চায় নিজেদের রক্ষা করতে। কিন্তু দুর্নীতির দায় থেকে মুক্ত হওয়া এত সহজ নয়।