অটল বিহারী বাজপেয়ী কাশ্মীরে গণতান্ত্রিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন
তিনি চেয়েছিলেন শান্তি স্থাপন, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ফলে সফলও হয়ে ছিলেন তিনি
- Total Shares
১৯৯৮ সাল থেকে ২০০৪ অবধি দ্বিতীয়বারের জন্যে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলিয়ে ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। সেই সময়, পিডিপির মতো দ্বিপাক্ষিক নয়, কাশ্মীর সংক্রান্ত আলোচনায় তিনি ত্রিপাক্ষিক (ভারত-পাকিস্তান ও কাশ্মীর) আলোচনার উপর জোর দিয়েছিলেন তিনি।
আসলে কাশ্মীরে শান্তি ফেরাতে বাজপেয়ী চেয়েছিলেন প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গেও যেন সুসম্পর্ক গড়া যায়। কাশ্মীর নিয়ে সর্বপ্রথম স্লোগানও রচনা করেন তিনি - 'ইনসানিয়ত, জামহুরিয়ত, কাশ্মীরীয়ত', যার অর্থ মনুষ্যত্ব, শান্তি ও কাশ্মীরবাসীদের পবিত্রতা রক্ষা।
বাজপেয়ী চেয়েছিলেন উপত্যকায় সত্যি সত্যি শান্তি স্থাপন হোক, কাশ্মীর যেন সবদিক থেকে অগ্রসর হয়ত এবং সমৃদ্ধশালী হয়ে উঠুক। তাঁর লক্ষ্যে তিনি এতটাই সৎ ছিলেন যে একেবারে হুরিয়তরাও আলোচনার টেবিলে বসতে বাধ্য হয়।
কাশ্মীরে যেন অবাধ ও শান্তিপূর্ন নির্বাচন হয় তা মনে প্রাণে চেয়েছিলাম বাজপেয়ী। যার ফসল তুলেছিল পিডিপি।
বাজপেয়ী মনে করতেন যে বন্দুক দিয়ে কাশ্মীর সমস্যা সমাধান করা যাবে না। তিনি জানিয়েছিলেন যে শুধুমাত্র 'ইনসানিয়ত, জামহুরিয়ত, কাশ্মীরীয়ত' দিয়েই কাশ্মীর সমস্যা সমাধান সম্ভব।
সেই সময় দুই দেশের যুদ্ধ একেবারে ভবিতব্য হয়ে পড়েছিল। কিন্তু বাজপেয়ী সেই যুদ্ধ লাগতে দেননি। উল্টে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে সফল হয়েছিলেন।
বাজপেয়ীর এই সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি পাকিস্তান ও কাশ্মীর নেতাদের সঙ্গে বারংবার বৈঠক। পাকিস্তানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে সফল হয়েছিলেন বাজপেয়ী। তিনি বিশ্বাস করতে যে দারিদ্র্য ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যদি দু'দেশ একসঙ্গে লড়াই করে তাহলে দু'দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন হতে বাধ্য।
তাঁর এই রাজনৈতিক ধারা কিন্তু জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াগুলোকে অনেক বেশি সংবেদনশীল করে তুলেছিল।
আমাদের বর্তমান সভাপতি মেহবুবা মুফতি বারংবার নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছেন তিনি যেন পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করে এই সংঘর্ষ-প্রবন রাজ্যে শান্তি স্থাপন করেন। ফেব্রুয়ারী মাসেও তিনি টুইট করে জানান, "কাশ্মীরে রক্তপাত বন্ধ করতে হলে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা খুবই জরুরি।" শুধু তিনি নয় ভারতের অনেক প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতারাও এই মত পোষণ করেছেন। পিডিপিও এখন বাজপেয়ীর দেখানো পথে কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের জন্যে ত্রিপাক্ষিক আলোচনা চায়।
এ বছর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন যে তাঁর সরকার নাকি বাজপেয়ীর দেখানো পথেই হাঁটবে। আমি মনে প্রাণে চাইব সে কথা যেন সত্যি হয়। আমি মনে প্রাণে চাইব কাশ্মীরে যেন আবার 'ইনসানিয়ত, জামহুরিয়ত, কাশ্মীরীয়ত' প্রতিষ্ঠিত হয়।
ঈশ্বরের কাছে একটাই প্রার্থনা উপমহাদেশে যেন শান্তি স্থাপন হয়।