মধ্যপ্রদেশে বিধানসভা ভোটের আগে কংগ্রেসকে ঐক্যবদ্ধ করাই লক্ষ্য দিগ্বিজয় সিংয়ের

গ্রামের মানুষের সঙ্গে কংগ্রেস নেতাদের দূরত্ব ঘোচানোর চেষ্টা করছেন

 |  3-minute read |   04-06-2018
  • Total Shares

মধ্যপ্রদেশের সবচেয়ে বিদগ্ধ ও দক্ষ রাজনীতিকদের অন্যতম, রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দিগ্বিজয় সিং বৃহস্পতিবার থেকে আরও একটি যাত্রা শুরু করেছেন। সম্প্রতি তিনি অতি কঠোর নর্মদা পরিক্রমা সম্পূর্ণ করে ফিরেছেন।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে, তার আগেই কংগ্রেস নেতাদের গ্রামস্তরে নামিয়ে এনে গ্রামের মানুষের সঙ্গে তাঁদের দূরত্ব দূর করাই এই ‘একতা যাত্রা’র উদ্দেশ্য।

দিগ্বিজয় সিংকে মাথায় রেখে মধ্যপ্রদেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ যে কোঅর্ডিনেশন কমিটি গড়েছেন, সেই কমিটিরই জনা দশেক সদস্য নিয়ে মধ্যপ্রদেশের ওরছায় রামরাজা মন্দির দর্শন দিয়েই শুরু হয় একতা যাত্রা। এই কমিটিতে রয়েছেন মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের সব গোষ্ঠীর সদস্যই।

এই কমিটির সদস্যরা বাসে করে ঘুরবেন এবং আগে থেকে ঠিক করে রাখা বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দলের কর্মী ও নেতাদের সঙ্গে দেখা করবেন, তাঁরা জনসভাও করবেন। কোঅর্ডিনেশন কমিটির কয়েকটি নিয়মনীতি রয়েছে। যাঁরা ভোটের প্রার্থী হতে আগ্রহী তাঁদের এখানে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি এবং কোনও নির্দিষ্ট কংগ্রেস নেতার নামে স্লোগানও দেওয়া যাবে না।

দলের মধ্যে যাতে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মাথাচাড়া না দেয় সে জন্য এই একতা যাত্রায় শুধুমাত্র কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীর নামেই স্লোগান দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই যাত্রার মূল সুর হল ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত দলের মধ্যে সব ভেদাভেদ ভুলে একসঙ্গে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা।

dg-copy_060418080310_060418085931.jpg

বৃহস্পতিবার ওরছা থেকে যাত্রা শুরু হয়ে তা তিকমগড় পর্যন্ত যায়, সেখানেই কংগ্রেস নেতাদের বৈঠক হয়। সেখান থেকে যাত্রা এগোয় ছতরপুর পর্যন্ত, রাতের বন্দোবাস্ত সেখানেই। বুন্দেলখণ্ড ও বাঘেলখণ্ডের বিভিন্ন জেলায় তাঁদের যাওয়ার কথা। টুইট করে দিগ্বিজয় সিং বলেছেন, যদি কংগ্রেসীরা সঙ্ঘবদ্ধ হয়, তা হলে মধ্যপ্রদেশে দাঁড়ানোর সুযোগই পাবে না বিজেপি।

এই যাত্রার লক্ষ্য কতটা পূরণ হবে? এক কথায় বলা যায়, দলের মধ্যে ও দলের বাইরে যদি কোনও রাজনৈতিক বিরোধীকে কোনও ব্যাপারে কেউ কিছু বোঝাতে সক্ষম হন, তা তিনি এই দিগ্বিজয় সিং।

কংগ্রেসের মধ্যে তিনি এই রাজ্যে সবচেয়ে বেশি দিন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। রাজ্যে কংগ্রেস সভাপতি বদলের মতো গোলমেলে পরিস্থিতির মধ্যে, তাঁর এক সময়ের পরামর্শদাতা বন্ধু অর্জুন সিংয়ের কংগ্রেস থেকে প্রস্থান এবং বিজেপির চ্যালেঞ্জের মতো পরিস্থিতিও তিনি সামলেছেন।

কংগ্রেস রাজনীতিতে একটা অদ্ভুদ ঘটনাও বৃহস্পতিবার ঘটেছে, এক সময় দিগ্বিজয় সিংয়ের বিরোধী তথা ওরছার প্রাক্তন সাংসদ সত্যব্রত চতুর্বেদী এ দিন উপস্থিত ছিলেন ওরছার বর্তমান সাংসদের সঙ্গে। রাজ্যে গভীর ভাবে শিকড় ছড়িয়ে বসা বিজেপিতে পরাজিত করতে সকলের যে একজোট হওয়া দরকার, সে কথা বলেন এই দুই নেতাই। আরও দারুণ কী কী ছবি উঠে আসবে, তা জানার জন্য আগামী কয়েকমাস অপেক্ষা করতে হবে।

যে ভাবনা থেকে এই যাত্রা শুরু, যাত্রা শুরুর কয়েকদিনের মধ্যেই তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। দিল্লিতে জ্যোতিরাদিত্য সিন্দিয়ার বাসভবনে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন দিগ্বিজয় সিং। আগেই রঘোগড়ের বিধায়ক তথা দিগ্বিজয় সিংয়ের ছেলে শ্রীবর্ধন সিং রঘোগড় দুর্গে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন সিন্দিয়াকে। আমন্ত্রণ গ্রহণ করে সিন্দিয়া বলেছিলেন, ১৫ বছর পরে তিনি ওই দুর্গে যাচ্ছেন।

কমল নাথ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পর থেকেই দিগ্বিজয় সিং নানা ভাবে সিন্দিয়ার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করছেন, কারণ কংগ্রেসের ভিতর থেকেই শোনা যাচ্ছে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার দৌড়ে ছিলেন সিন্দিয়াও, তবে এ ব্যাপারে কলকাঠি নেড়েছিলেন দিগ্বিজয় সিং।

বিজেপির মধ্যে এখন যে বিষয়ে কথাবার্তা হচ্ছে তা হল বহুধাবিভক্ত কংগ্রেসের মধ্যে ঐক্য। একটা ব্যাপার কংগ্রেস নেতারাও উপলব্ধি করছেন এবং সে ব্যাপারে সতর্কও হচ্ছেন, তবে রাজনীতির ধর্ম হল ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ন্ত্রণে রাখা যা মোটেই সহজ নয়। আসল চ্যালেঞ্জ আসবে যখন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে আর পরিকল্পনা অনুযায়ী তখনই সেই দ্বন্দ্বের সুযোগ নিতে চাইবে বিজেপি।

(সৌজন্য: মেল টুডে)

 

লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

RAHUL NORONHA RAHUL NORONHA

The writer is Associate Editor, India Today.

Comment