ঋণমকুব করা কোনও সমাধান নয়, স্রেফ রাজনৈতিক গিমিক
লোকসভা ভোটের আগে কৃষিঋণ মকুবের ঢল, তাতে কৃষকের লাভ হচ্ছে কি?
- Total Shares
কথা দিয়ে কথা সবসময় রাখা যায় না। অনেকে আবার কথা রাখেও না। তবে এবার কথা রাখা বড় দায়। কয়েক মাস পরেই যে লোকসভা ভোট, তার কোপ যে ঘাড়ে পরবে! তাই শপথগ্রহণের ঘণ্টা কয়েকের মধ্যেই মধ্যপ্রদেশের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ প্রতিশ্রুতি পালন করলেন। দু’লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেওয়া কৃষিঋণ তিনি মকুব করে দিলেন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ছত্তিশগড়ের নতুন কাণ্ডারী ভূপেশ বাঘেলও একই পথের আনুগামী হলেন। কৃষিঋণ নিয়ে বিজেপি-তৃণমূল যে যার খেলায় মত্ত, কিন্তু কৃষকের সমস্যার সুরাহা তাতে কতটা কি হবে সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।
हमारे किसानों के आने वाले कल को सुरक्षित करने के लिए मैं वो हर कोशिश करने वाला हूँ जिससे उनका भविष्य सुरक्षित बने| यह सिर्फ़ वादा नहीं है, कर्तव्य भी है मेरा|किसान दिवस के अवसर पर देश के किसानों को सलाम| आप हो तो हम हैं|#ThankYouFarmers pic.twitter.com/xOK9N9M0pu
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) 23 December 2018
কৃষিঋণ কী?
জমি ছাড়াও চাষের জন্য কৃষককের প্রয়োজন হয় সার, জল, বীজ। এসব তাঁকে বাজার থেকে কিনতে হয়। এর জন্য চাই টাকা। কেবল তাই নয়, চাষের জন্য কিনতে হবে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও। তার জন্যও লাগবে টাকা। এই সব কিছুর জন্য অনেক সময়ই ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হয়। শুধু কি তাই? চাষের পর ফসল রাখা, সেই ফসল নিয়ে যাওয়াও তো খরচসাপেক্ষ ব্যাপার। তার জন্যও ঋণ মেলে। ঋণ দীর্ঘমেয়াদী বা স্বল্পমেয়াদী দুটোই হতে পারে।
শুধু জমি থাকলেই চলে না, বিভিন্ন কারণে ঋণ নিতে হয় কৃষকদের (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে)
মরসুমি চাষ যাঁরা করেন তাঁরা স্বল্প মেয়াদী ঋণ নেন। বেশিরভাগ কৃষকই মরসুমি চা। করেন এবং আসল সমস্যার কারণ লুকিয়ে এখানেই। এ দেশে কৃষকরা এখনও প্রকৃতির উপর প্রবল ভাবে নির্ভরশীল। ফলে ঋতুর খামখেয়ালিপনা থেকেই শুরু হয় যাবতীয় সমস্যা।
দু’-এক কথা আরও
কৃষকদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিকে কয়েকটি বাধ্যবাধ্যকতা তৈরি করে দিয়েছে সরকার দেশে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ রয়েছে যেগুলিকে প্রায়োরিটি সেক্টর বলা হয়। এর মধ্যে পড়ে কৃষি, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ, বাড়িঘর, শিক্ষা, সামাজিক পরিকাঠামো প্রভৃতি। ব্যাঙ্ক যদি সারাবছরে মোট ১০০ টাকা ঋণ দেবে বলে ঠিক করে থাকে তাহলে ৪০ টাকা এই প্রায়োরিটি সেক্টরের জন্য বরাদ্দ রাখা বাধ্যতামূলক। ওই ৪০ টাকার মধ্যে অন্তত ১৮ টাকা রাখতে হবে কৃষিক্ষেত্রের জন্য। শুধু তাই নয় ওই ১৮ টাকার মধ্যে থেকে ৮ টাকা বরাদ্দ রাখতে হবে ছোট ও প্রান্তিক কৃষকদের জন্য।
যে ব্যাঙ্ক এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে না, তারা সেই টাকা গ্রামীণ পরিকাঠামো উন্নয়ন তহবিলে (Rural Infrastructure Development Fund বা RIDF) দিয়ে দিতে হবে। সরকার তখন ওই টাকা RIDF-এর থেকে নিয়ে কৃষিক্ষেত্রে খরচ করবে।
প্রান্তিক কৃষক কারা
প্রান্তিক কৃষক তাঁরাই যাঁদের এক হেক্টর বা প্রায় সাড়ে ছয় বিঘার মতো বা তার কম জমি রয়েছে। আর যাঁদের এক হেক্টরের বেশি তবে দুই হেক্টর পর্যন্ত জমি রয়েছে তাঁরা ছোট চাষি। কিন্তু বাস্তূবে দেখা যায় অনেকেই তো দু’বিঘার কম জমিতেও চাষ করে থাকেন। তাহলে তাঁদের কি বলব?
সাধারণত কৃষকরা সর্বোচ্চ ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেয়ে থাকেন। যাঁরা বড় কৃষক তাঁদের ক্ষেত্রে ঋণের অঙ্ক সর্বোচ্চ ২ কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। আর কৃষি পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ঋণের অঙ্কটা দাঁড়ায় মোটামুটি ১০০ কোটি টাকা পর্যন্ত। কৃষকদের এই ঋণের জন্য সুদ দিতে হয় বার্ষিক ৭ শতাংশ হারে, যার মধ্যে ৩ শতাংশ ভর্তুকি দেয় সরকার।
ঋণ পরিষোধের সমস্যা
কৃষক বেশিরভাগ সময়েই ঋণ শোধ করতে সমস্যায় পড়েন। অনেক কারণের মধ্যে দু’টি কারণ কৃষকের পিছু ছাড়ে না। প্রথমত প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ফসলের ক্ষতি। আর ফসলের দাম অধিকাংশ সময়েই ন্যূনতম সংগ্রহ মূল্যের চেয়ে অনেক কম হয়।
কৃষক মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলান তা বিক্রি করার জন্য। ফসলের জন্য যে টাকা ধার-দেনা করে খরচ করা হল, বিক্রি করে তার থেকে যদি লাভই না হয়, তাহলে তিনি ধার শোধ করবেন কী ভাবে? এর উপর বীজ, সার-সহ অন্যান্য খরচ তো প্রত্যেক বছরেই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গোদের উপর বিষ ফোঁড়া হিসাবে দেখা দিয়েছিল নোটবাতিল। গ্রামীণ অর্থনীতির যাবতীয় লেনদেনে চলে কাঁচা টাকায়, ফলে গ্রামীণ অর্থনীতির উপর বড়সড় আঘাত হেনেছে বিমুদ্রাকরণ।
ঋণ কার কী ভাবে জোটে
বস্তুতপক্ষে অল্প সংখ্যক কৃষকের ভাগ্যেই চাষআবাদের জন্য ঋণ জোটে। বেশিরভাগ কৃষকই গ্রামীণ আর্থিক সংস্থাগুলির উপর নির্ভরশীল হয়ে থকেন। তার মধ্যে অনেককেই আবার মহাজনের পায়ে পড়তে হয়।
২০১৫ সালের একটি হিসাব বলছে, কৃষকদের ব্যাঙ্ক নাবার্ড ৭০ শতাংশ কৃষিঋণই দিয়েছে কর্পোরেট সংস্থাকে। ক্ষুদ্র বা প্রান্তিক কৃষকরা এক্ষেত্রে পুরোটাই পড়েছেন ফাঁকে। তার মানে, সরকার কৃষকদের ঋণ মকুব করলেও সবাই তার আওতায় পড়ছে না। এ ছাড়া এরমধ্যে গিমিক বা রাজনৈতিক চমক থাকে প্রচুর।
কী রকম গিমিক সেটা অতি সাম্প্রতিক কালের একটি উদাহরণ দিলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে। মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতায় এসেই নতুন মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ কৃষকদের ঋণ মকুবের কথা ঘোষণা করেছেন। ঋণ মুকুবের শর্ত তো থাকেই। কী সেই শর্ত?
मध्य प्रदेश के मुख्यमंत्री ने किसानों का कर्ज माफ कर दिया है| अब राजस्थान और छत्तीसगढ़ की बारी है| pic.twitter.com/jwDJoLShbp
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) 17 December 2018
প্রথমত যাঁরা দু’লক্ষ টাকার নীচে ঋণ নিয়েছেন এবং একত্রিশে মার্চের আগে সেই ঋণ নেওয়া হয়ে থাকলে তাঁদের জন্যই মকুব করা হবে। কিন্তু ঋণের বেশি প্রয়োজন হয় বীজ কেনার জন্য আর সেই কারণেই অধিকাংশ কৃষক ঋণ নিতে বাধ্য হন। বীজ কেনার টাকাটা লাগে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ফলে বেশিরভাগ কৃষক থেকে গেলে ঋণ মকুবের বাইরে।
তাছাড়া শুধুমাত্র রাষ্ট্রীয় বা সরকারি ব্যাঙ্ক থেকে পাওয়া ঋণের ক্ষেত্রেই এই শর্ত প্রযোজ্য। সে সংখ্যাও তো হাতেগোনা! তা ছাড়া যে সব কৃষিশিল্পে ৭০ শতাংশের বেশি শ্রমিক মধ্যপ্রদেশের ছিলেন, তাঁরাই এই সুবিধা পাবেন (যাঁরা বিহার-উত্তরপ্রদেশের শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করিয়েছেন তাঁরা এই সুযোগ পাবেন না)। অতএব...?
তাহলে ঋণ মকুব মানে কী
কৃষিঋণ মকুব মানে কি এগ্রিকালচার সেক্টরের সব লোন মকুব? তা কখনোই নয়। ক্ষেত্র নির্দিষ্ট করা থাকে। সমস্যায় যেহেতু ছোট আর প্রান্তিক চাষিরাই বেশী থাকেন, তাই প্রাথমিক ভাবে তাঁদের ঋণ সম্পূর্ণ মকুব করা হয়। আর বাকিদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয় কিছুটা।
আবার কোনও কোনও সরকার সবক্ষেত্রেই ছাড় দিয়েছে, তেমনও ঘটেছে। কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার খুব ভালো করেই জানে, পুরোপুরি কৃষিঋণ মকুব মানে সরকারি কোষাগারের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি, সে চাপ সহ্য করা অসম্ভব ব্যাপার। গোটা দেশে যে কৃষিঋণ মকুবের ধুয়ো উঠেছে, তা যদি সত্যি সত্যিই কার্যকর হয় তাহলে ব্যাঙ্কের জমা থেকে থেকে ৭০ হাজার কোটি টাকা এক ধাক্কায় খরচ হয়ে যাবে। সেই টাকা শোধ দেবে কোন গৌরী সেন?
কৃষকদের সঙ্গে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী, তাঁর প্রতিশ্রুতি মতো কৃষিঋণ মকুব হয়েছে তিন রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসতেই (ছবি পিটিআই)
তার জন্য আছে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ। পরোক্ষে চাপ এসে পড়বে সেই কৃষকদের ঘাড়েও। তাহলে? দরকার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, সার্বিক পরিকাঠামোর সংস্কার। সেটা কোনও সরকারই করেনি। কারণ আড়ৎদাররা বেশ শক্তিশালী। তারাই বাজার নিয়ন্ত্রক। তারা মহাজনও বটে।
সমস্যার উৎসের খোঁজে
কৃষক যে তাঁর উৎপাদিত কৃষিপণ্যের সঠিক মূল্য পান না সেটাই আসল সমস্যা। সেই সমস্যার প্রধান কারণ হল কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের খরচ আর সেই পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের (এমএসপি) ফারাক থেকে যাওয়া। কৃষকের কাছে এটা কেবল বাড়তি বোঝা নয় চিরস্থায়ী সমস্যা।
ঋণ মুকুবের থেকে ওই পার্থক্য দূর করতে সরকারের তরফে নিয়মিত ভাবে যদি আর্থিক ভর্তুকি দেওয়া হয়, তাহলে কৃষকের অনেক বেশি উপকার হয়। যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে ২৩টি কৃষিজাত পণ্যের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নির্ধারণ করা আছে কিন্তু বাস্তবে মাত্র তিনটি পণ্যের ক্ষেত্রে তা মানা হয়।
দেশের অধিকাংশ রাজ্যের মাত্র ১৫ শতাংশ কৃষক ঋণ মকুবের সুবিধা পান। কারণ এই রাজ্যগুলিতে বেশির ভাগ কৃষকই বাস্তবে কোনও প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ পান না। আর মাত্র কয়েকটি রাজ্যের ২৫ শতাংশেরও কম কৃষক ঋণের আওতার মধ্যে পড়েন। তবে দেশের মোট কৃষকের প্রায় ৬০ শতাংশ কৃষি ঋণ নেন৷ তাঁদের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ ঋণ নেন কোনও ব্যাঙ্ক থেকে, বাকিরা অন্য কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা মহাজনের কাছ থেকে৷
ব্যাঙ্কঋণ নেওয়া কৃষকদের মধ্যে ৮০ শতাংশ কৃষকই তাদের কৃষি ঋণ পরিশোধ করেন। কিন্তু তাঁরা থাকেন চরম আর্থিক সমস্যায়।
সেই ট্র্যাডিশন আজও
ভোটের আগে রাজনৈতিক দলগুলি যে ঋণমকুবের আওয়াজ তোলে তা কি কৃষকদের
সমস্যার স্থায়ী সুরাহার জন্য নাকি শুধুমাত্র ভোটে কৃষকদের সমর্থন পাওয়ার জন্য?
বিগত সাত দশকের বেশী সময় ধরে একই কাহিনি পুনরাবৃত্ত হয়ে চলেছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, মধ্যপ্রদেশে ২০০৪ থেকে ২০১৬–র মধ্যে ১৬,৯৩২ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন৷ যার অর্থ, দিনে গড়ে তিন জনেরও বেশি৷ ছত্তিশগড়েও গত ১২ বছরে ১২,৯৭৯ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছেন। রাজস্থানে একই সময়ে কৃষক আত্মহত্যার সংখ্যা সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের বিরুদ্ধে কৃষকদের ক্ষোভ এতটাই চড়া সুরে উঠেছিল যে ‘মন্দির ওহি বনায়েঙ্গে’ স্লোগান তাকে একটুকুও ক্ষীণতর করতে পারেনি৷
স্বাধীনোত্তর ৭০ বছরের বেশি সময়ে কৃষকদের মূল সমস্যাগুলির দিকে নজর দেয়নি কোনও সরকার। সার, বীজ, কীটনাশক, সেচের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির দাম বেড়েছে লাফিয়ে। খরা–বন্যায় জর্জরিত হয়ে, ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে, ঋণের বোঝা আর সইতেনা পেরে আত্মহত্যার মিছিল তো আজ নয়, সেই কংগ্রেস আমল থেকেই চলছে।
গত কয়েক বছরে আত্মহত্যার প্রবণতা এত বেড়েছে বলেই সেটা নজরে এসেছে আর রাজনৈতিক দল ঋণ মকুবের প্রতিশ্রুতির গাজর কৃষকদের সামনে ঝোলাচ্ছে। কেন বছরের পর বছর কৃষককে চাষের জন্য ঋণ নিতে হবে? জবাব মিলবে না তাদের কাছ থেকে।
ঋণ মকুব নয়, দরকার উপযুক্ত পরিকাঠামো (ছবি: রয়টার্স)
ভোটের মুখে তাঁরা কৃষক দরদি হবেন, অথচ তাঁদের কৃষক বিরোধী নীতিই কৃষকদের এই দুরবস্থার জন্য দায়ী৷ তাঁদের উদারীকরণ তথা একচেটিয়া পুঁজির স্বার্থরক্ষাকারী নীতির কারণেই সারের দাম আকাশছোঁয়া, বীজ কৃষকদের হাত থেকে চলে গেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলির হাতে। কৃষিপণ্যের বাজার একচেটিয়া পুঁজিপতিদের মুঠোয়৷ তাঁদের স্বার্থের দিকে লক্ষ্য রেখেই কৃষিপণ্যের আমদানি–রফতানি নীতি ঠিক হয়৷ তারই পরিণতিতে শুধু নাসিকের পেঁয়াজ চাষিরা নন, আলু, টম্যাটো, লঙ্কা, তুলো – সব ধরনের ফলনের সঙ্গে যুক্ত চাষিরাই আত্মহত্যা করছেন। ফড়ে, আড়তদার, কালোবাজারি এবং একচেটিয়া পুঁজিপতির দল কৃষককে শুষে নিয়ে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয় না, ঠায় দাঁড়িয়ে দেখে। অন্যদিকে কালোবাজার ভোটের খরচ, দল চালানোসহ অন্যান্য খরচ জোগায়। ফলে এই বছর হয়তো ঋণ শোধ করতে হবে না। কিন্তু তার পরে?
একটি কৃষি নির্ভর দেশে কৃষি কাজের সামগ্রিক পরিকাঠামোয় আমূল পরিবর্তন দরকার। প্রযুক্তিক্ষেত্রে কৃষকদের জন্য সুবিধা না আনলে ধীরে ধীরে কৃষি কাজ থেকে সরে যাবেন কৃষকরা। উলটো দিকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায়, তাঁরা বেকার হবেন। দেশের খাদ্য সুরক্ষা মাথায় উঠবে। আর ভাবটাও এমন যেন, ব্যাঙ্কগুলিকে সরকার এই টাকা নিজেদের পকেট থেকে দেবে। আসলে এই হাজার হাজার কোটি টাকা তো সেই মধ্যবিত্ত, কৃষক, গরিবদের পকেট থেকেই সুদে আসলে আদায় করবে সরকার। তাহলে ঋণমকুব বাস্তবে গিমিক ছাড়া কি!