আফগানরা কী চায় তা আমার জানা, আফগানরা তালিবান চায় না
তালিবানের সঙ্গে আলোচনার কোনও মানেই হয় না, যদি না সেই আলোচনা প্রক্রিয়ায় নাগরিকরা থাকে
- Total Shares
২০১৮ সালের ২০ ও ২১ অক্টোবর সাড়ে তিন মিলিয়ন আফগান ভোটার দেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের জন্য ভোটদান করেছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত, এখন নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। কমিশনের আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, ভোট গণনার সময়ে তারা নাকি ঘুষ চেয়েছিলেন। ভোট গণনার প্রক্রিয়া নিয়েও সন্দেহ দানা বেঁধেছে। এর ফলে, রাতারাতি, গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকেই প্রহসন বলে মনে হতে শুরু করে দিয়েছে।
বিশ্লেষকরা নিজেদের মতামত পোষণ করেছেন। প্রার্থীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি শুরু করেছেন। নাগরিকরা নির্বাচন কমিশনের কাছে তাদের অভিযোগ জমা করেছেন। শেষ পর্যন্ত, আইনি হস্তক্ষেপে এই পরিস্থিতির সুরাহা করা হবে বলে ঠিক হয়েছে।
গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠানের জন্য হত্যান করেছিলেন আফগান ভোটাররা [ছবি: রয়টার্স]
এই পরিস্থিতি কি আমাকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছে?
না, একদমই নয়।
কেন?
আমি কাবুল সংসদের একটি আসনে প্রার্থী হয়েছিলাম এবং জিতেও ছিলাম। আমি আফগান নাগরিকদের মন জয় করেছিলাম। হয়ত আমি সরকারিভাবে সংসদের সদস্য হতে পারেনি, কিন্তু আমি সাধারণ মানুষের হৃদয় জয় করে নিয়েছিলাম। প্রচারের সময়ে, আমি সরকার ও জনগণের মধ্যে পার্থক্যটা ঠিক কোথায় তা বোঝাতে সফল হয়েছিলাম। আর, এর ফলে, আমি কিছু উপসংহারে পৌঁছাতে পেরেছিলাম।
আগামীকাল কী হতে চলেছে এই আতঙ্ক কিন্তু আফগান নাগরিকদের গ্রাস করে রয়েছে।
সরকারের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ ব্যবস্থা অত্যন্ত শ্লথগতির। কোনও প্রতিনিধি দল সফরে এলে, কোনও আইন প্রণয়ন করা হলে কিংবা কোনও নীতি নির্ধারণ করা হলে জনগণ সবচাইতে শেষে খবর পায়। এই বিষয়টি আমি এখানে উত্থাপন করছি কারণ তালিবানের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার একটি সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
আগামীকাল কী হতে চলেছে এই আতঙ্ক কিন্তু আফগান নাগরিকদের গ্রাস করে রয়েছে [ছবি: রয়টার্স]
যা, সত্যি সত্যিই মেনে নেওয়া যায় না।
এক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। এক তরফা সিদ্ধান্ত নেওয়া কোনও মতেই ঠিক নয়। জনগণের মতামত নেওয়া উচিত ছিল। জনগণের সঙ্গে আলোচনা করলে অনেক সমস্যারই সমাধান পাওয়া যায়। সরকারের মতো জনগণও উদ্বিগ্ন থাকে আর তাই প্রত্যেককেই আলোচনা প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা উচিত।
তাই, আমার মতে, সরকারের উচিত জনগণের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভিযোগুলো খতিয়ে দেখে তারপর সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করা।
তালিবানের সঙ্গে চুক্তি মেনে নেওয়া যায়না [ছবি: রয়টার্স]
আরও একটি ইস্যুর কথা আমি তুলে ধরব। আফগান সমাজে একটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে অন্য সম্প্রদায়ের মতের আদান প্রদান খুব কম হয়। তাই পথেঘাটে কিংবা আমাদের এলাকায় কী ঘটে চলেছে তা নিয়ে কেউই খবর রাখে না। এর ফলে, সমাজের মধ্যে বিদ্রোহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিরাপত্তা ও বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আমাদের একে ওপরের সঙ্গে কথা বলা উচিত।
সরকারি আধিকারিক, পৌর সংস্থাগুলো, পুলিস প্রশাসন ও জনগণ মাইল ফোরাম তৈরি করুক। এই ফোরামগুলোতে সাধারণ মানুষ নিজেদের দুঃখ দুর্দশা নিয়ে আলোচনা করতে পারবে।
আফগানরা একে ওপরের সম্বন্ধে খোঁজ খবর রাখে না [ছবি: রয়টার্স]
এই ধরণের আলাপ আলোচনার মাধ্যমেই কিন্তু আফগানিস্তানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে।
আমি নির্বাচনে জিতেছিলাম কর্ম আমি আফগান নাগরিকদের মানসিকতা বুঝি।
আমি জিতেছিলাম কারণ দেশ ও দশের প্রতি আমার দায়িত্বটা ঠিক কী তা আমি জানি।
আমি জিতেছিলাম কারণ আমি ভবিষ্যৎ সুন্দর করে তুলতে বিরামহীন কাজ করে চলেছি।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে