লোকসভা নির্বাচনের আগে হিন্দুভোট নিয়ে কী ভাবে লড়ছে কংগ্রেস ও বিজেপি
প্রতিবেশী চিন বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিধর দেশ আর আমরা লড়ছি গোরক্ষা নিয়ে
- Total Shares
হিন্দু ভোটের দিকে তাকিয়ে এখন বিজেপি ও কংগ্রেস প্রতিযোগিতায় নেমেছে, দুটি দলই দেখাতে চাইছে যে হিন্দুদের প্রতি তাদের দরদই সবচেয়ে বেশি, তারাই হিন্দুত্বের আসল কথা।
আগে লোকে বিজেপিকেই হিন্দুত্বের ধ্বজাধারী, রামমন্দির, গোরক্ষা, ঘর ওয়াপসি প্রভৃতির পক্ষে থাকা রাজনৈতিক দল বলে মনে করত, তবে এখন কংগ্রেসও তাদের পদাঙ্কই অনুসরণ করছে – অবশ্যই তারা আসন্ন লোকসভা ভোটের কথা ভেবেই এ সব করছে।
গুজরাটে ভোটের সময় রাহুল গান্ধী তো নিজেকে পৈতেধারী ব্রাহ্মণ ও শিবভক্ত বলে তুলে ধরছিলেন, তিনি বেশ কয়েক ডজন মন্দিরে যান। এখন তিনি কৈলাস-মানসসরোবর যাত্রা করছেন।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে কংগ্রেস ও বিজেপি এখন লড়াই করছে হিন্দুত্ব নিয়ে (ছবি: পিটিআই)
২০১৭ সালের অগস্ট মাসেই মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে তাঁর সরকার নর্মদার তীরে ১০৮টি গোশালা প্রতিষ্ঠা করবে – প্রতি পাঁচটি গ্রামপঞ্চায়েতে একটি করে এবং পরে পুরো রাজ্যে এই ধরনের ১০০০টি গোসালা প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রতিশ্রুতি এখনও পূরণ হয়নি। গত রবিবার বিদিশার গঞ্জ বিসোদায় একটি জনসভায় মধ্যপ্রদেশের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি কমল নাথ অভিযোগ করেন, গোরুর জন্য কিছুই করেনি বিজেপি, তারা হাজারে হাজারে মরছে। তার পরেই তিনি ঘোষণা করেন যে, কংগ্রেস যদি ক্ষমতায় আসে তা হলে প্রত্যেক পঞ্চায়েতে একটি করে গোশালা করে দেওয়া হবে।
আশ্চর্য হয়ে ভাবছি, দেশ কোন দিকে এগোচ্ছে?
চিন যত দ্রুত এগিয়ে চলেছে এবং ইতিমধ্যেই বিশ্বের দ্বিতীয় শক্তিধর দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেছে তখনও আমরা রামমন্দির, ঘর ওয়াপসি ও গোরক্ষা নিয়ে লড়াই করে চলেছি।
২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে আমরা এইরকমই আরও কিছু একটা আশা করতে পারি! (ছবি: পিটিআই)
আমাদের ধর্মনিরপেক্ষতা এখনও কাগজেকলমেই রয়ে গিয়েছে, সেই কাগজও চোতা হয়ে গেছে। গোরক্ষাকারী ও গণপিটুনিতে মুসলমান হত্যা এখন গণতন্ত্রের পরিহাসের নামান্তর। ধর্মনিরপেক্ষ দেশ দেশ হিসাবে দুনিয়ার চোখে আমরা যে ভাবে কলঙ্কিত হয়েছি, সেই কলঙ্ক মোছার নয়।
মধ্যপ্রদেশে কম্পিউটারবাবা-সহ পাঁচজন বাবাকে প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছে সেই রাজ্যের সরকার। রাজস্থানে গোরুর কল্যাণের জন্য পৃথক একটি মন্ত্রক তৈরি করা হয়েছে। বাবা রামদেবের পতঞ্জলি থেকে গোমূত্র বিক্রি করা হচ্ছে এবং দাবি করা হচ্ছে সেটি নানা রোগের নিরাময়ে লাগে।
আগামী লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বলতে পারি, আমরা এমন আরও অনেক কিছু দেখতে পেতে পারি। ইতিমধ্যে অবশ্য বেকারত্ব, কৃষকদের সমস্যা বাড়ছে, পেট্রোল, ডিজেল ও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে আর আশঙ্কা করা হচ্ছে যে টাকার দাম আরও পড়বে।
আরও কী যে ঘটবে তা ভাবতেই ভয় করছে।