আজীবন কারাদণ্ড সজ্জন কুমারের, শিখবিরোধী দাঙ্গার ক্ষতে কি প্রলেপ পড়ল?
হত্যালীলায় প্রশাসন ছিল দর্শক, ১১টি এনকোয়্যারি প্যানেল ও ৩৪ বছর পার করেও বিচার জোটেনি
- Total Shares
চৌত্রিশটা বছর। ৩,০০০ মানুষের মৃত্যু, অবশেষে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন একজন। ১৯৮৪ সালের শিখ বিরোধী দাঙ্গায় কংগ্রেসের সজ্জন কুমারকে আজীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। ৩৪ বছর পরে অবশেষে ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেব লাগল সেই সব শিখ পরিবারের যাঁরা স্বজন হারিয়েছেন। ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পরে শিখদের নিধন করতে শুরু করেছিল যারা, তাদের অন্যতম নেতা ছিলেন সজ্জন কুমার। তবে এই তালিকায় আরও নাম রয়েছে। সাজা শোনার পরে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেছেন দণ্ডপ্রাপ্ত সজ্জন কুমার।
সজ্জন কুমার (ইন্ডিয়া টুডে)
Welcome Sajjan Kumar’s conviction by Delhi HC. Justice has finally been delivered. Sajjan was named by victims who I met in refugee camps then and I’d always maintained he should be punished.
— Capt.Amarinder Singh (@capt_amarinder) 17 December 2018
Resignation of #SajjanKumar from @INCIndia proves @KapilSibal wrong Sajjan Kumar has enjoyed political patronage of Congress for 34 years; Cong even wanted to give him MP ticket in 2009!!Today, instead of Sajjan Kumar, @RahulGandhi should resign for sheltering these butchers pic.twitter.com/M6wb0JKd0d
— Manjinder S Sirsa (@mssirsa) 18 December 2018
Union minister @HarsimratBadal_ today demanded action be taken against the Gandhi family for extending political patronage to the perpetrators of the 1984 Sikh massacres as enumerated by the Delhi high court while convicting family loyalist #SajjanKumar in a case of mass murder/1 pic.twitter.com/5mNT5vpsyV
— Shiromani Akali Dal (@Akali_Dal_) 17 December 2018
Not just Rahul Gandhi denied involvement in #1984SikhGenocide,it rewarded leaders involved including Kamalnath.Its only during Modi govt perpetrators like Sajjan Kumar convicted for the very first time.#SajjanConvicted #SajjanKumar#IndiaTrustsCongress pic.twitter.com/q1PYW76RvE
— Geetika Swami (@SwamiGeetika) 17 December 2018
১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পরের দিন থেকে শিখবিরোধী যে দাঙ্গা বেধেছিল, ইন্ডিয়া টুডের লেখ্যাগার থেকে আমরা দশটি ছবি তুলে ধরলাম দিল্লি ও অন্য শহরের রাস্তার। এই সব ছবির মাধ্যমে সেই সময়ের ভয়াবহতা আরও একবার ফিরে দেখা।
৩১ অক্টোবর ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করা হয়েছিল। তার পরের দিন অর্থাৎ ১ নভেম্বর সকাল থেকেই মারন্মুখ জনতা দিল্লির পথে নামে। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
শিখদের বাড়ি চিহ্নিত করার জন্য সেই উত্তেজিত সশস্ত্র জনতার হাতে ছিল ভোটার তালিকা, রেশন কার্ডের তালিকা এমনকি স্কুলের রেজিস্ট্রেশন ফর্মও। প্রত্যক্ষদর্শীরা দাবি করেছিলেন যে কংগ্রেস নেতারাই সেই সব তালিকা ওই হত্যাকারীদের হাতে তুলে দিয়েছিল। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
শিখদের বিদ্যালয় ও বাড়িগুলিই ছিল লক্ষ্য, সেগুলি লুঠ করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
পরবর্তীকালে বহু তদন্ত কমিশন বসানো হয়েছে, তারা দেখেছে যে সেই সময় দাঙ্গাবাজদের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপই করেনি পুলিশ। কয়েকটি ক্ষেত্রে পুলিশ আবার তাদের সঙ্গে যোগও দিয়েছিল। সেনা নামানো হয়েছিল, তবে তাদের বিশেষ কিছু করতে দেওয়া হয়নি। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
হাজার হাজার শিখ আশ্রয় নিয়েছিলেন বিভিন্ন রেল স্টেশন, সাময়িক ত্রাণশিবির এবং গুরুদ্বারে। তাঁদের ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে প্রমাণ করতে সরকার খুব দ্রুত সেইসব ত্রাণশিবির খালি করে দেয়। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর, সংসার ভেঙে যাওয়ার পরেও তাঁদের জন্য জীবনযাত্রার ন্যূনতম ব্যবস্থা করা হয়নি। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দাঙ্গার যাঁরা শিকার তাঁদের জন্য বিকল্প কোনও আবাসের ব্যবস্থা করেনি সরকার। তাদের জোর করে পুরনো বাসস্থানেই ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং সেই সব প্রতিবেশীদের সঙ্গেই থাকতে বাধ্য করা হয় যারা তাদের পরিবারের লোককে হত্যা করেছে। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
বেশ কিছুদিন ধরে সেই হিংসা চলেছিল। পুড়ে খাক হয়ে যাওয়া ঘর আর ধ্বংস হয়ে যাওয়া পরিবারই ছিল তাঁদের সম্বল। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
সেই দাঙ্গায় স্বামী ও পুত্রকে হারিয়েছিলেন বিভা শেঠি। তাঁর চোখের সামনেই তাঁর স্বামীর উপরে শাবল নিয়ে চড়াও হয় হামলাকারীরা। স্বামীকে বাঁচাতে যখন তিনি তাঁর নুয়ে পড়া শরীরটাকে আগলে রাখার চেষ্টা করেন তখন তাঁকেও প্রহার করে দাঙ্গাবাজরা। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
প্রত্যক্ষদর্শীরা দাঙ্গায় জড়িত হিসাবে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমার (বাঁ দিকে) ও জগদীশ টাইটলারের নাম করেছিলেন। বেশ কয়েকটি তদন্ত কমিশনও তাঁদের নাম করে। কিন্তু এত দিন কেউই দোষী সাব্যস্ত হননি, অবশেষে কারাদণ্ড হয়েছে সজ্জন কুমারের। (ছবি: ইন্ডিয়া টুডে আর্কাইভস)
এই ছবিগুলি হল ১৯৮৪ সালের সেই ভয়াবহ দাঙ্গার কয়েকটি ঝলকমাত্র।
যাঁরা সেই দাঙ্গায় বেঁচে গিয়েছেন তাঁদের সেই নিদারুণ বেদনার কথা এই ছবির মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব নয় – যেমন সম্ভব নয় সেইসব জঘন্য হত্যাকাণ্ড, লুটতরাজ ও অগ্নিসংযোগকারী অপরাধীদের লজ্জা দেওয়া এবং তাদের শাস্তি দেওয়া।
লেখাটি পড়ুন ইংরেজিতে