ত্বকের অকাল বার্ধক্য রোধ করতে এই রোদ্দুরে মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষরাও সানগার্ড ব্যবহার করুন
যদি কেউ ঘুমের ওষুধ খান, তাঁর দিকে বাড়তি নজর রাখুন
- Total Shares
গরম এড়ানোর জন্য আমরা নানা কিছু করি। সে সবের পাশাপাশি এখন থেকে বাড়তি নজর রাখুন শিশু ও প্রবীণদের উপরে। ওবেসিটির সমস্যা থাকলেও এই গরমে সমস্যা বেশি হয়।
পর্যাপ্ত জল খান
কথাতেই আছে জলই জীবন। আর গরমে এই কথাটা আমরা হাড়ে হাড়ে বুঝি। বাইরের গরম থেকে এসেই আমরা ফ্রিজের ঠান্ডা জলটা খেলে সত্যি যেন জীবন ফিরে পাই। তাই এই গরমে নিজেকে সুস্থ্য ও ঠান্ডা রাখতে সব সময় শরীরকে সম্পৃক্ত রাখুন। এই সময় আমাদের শরীর থেকে প্রচুর ঘাম বেরিয়ে যায় সঙ্গে অনেকটা জল ও নুনও বেরিয়ে যায়। তাই জল খেলে শরীরে জলের ঘাটতিটা আবার পূরণ হয়। প্রত্যেকদিন অল্প অল্প করে সারাদিনে মোট তিন থেকে চার লিটার জল খান। কিন্তু বাইরের গরম থেকে এসেই ফ্রিজের ঠান্ডা জল খাওয়াটা উচিৎ নয়। যদি ঠান্ডা জল খেতেই চান তাহলে একটু অপেক্ষা করি তারপর অল্প জলের সঙ্গে ঠান্ডা জলটা মিশিয়ে নিয়ে খেলতে পারেন। তবে যাঁরা হৃদ সমস্যায় ভোগেন কিংবা রেনাল ফেলিওরের সমস্যায় ভুগছেন তাঁদের অবশ্য ডাক্তারের নির্দেশে প্রতিদিন কতটা জল খেতে হবে সেটা বেঁধে দেওয়া থাকে।
ছাতা, রোদচশমা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
যাঁদের রোদে কাজ করতে হয় বা যাঁরা দিনের বেশ অনেকটা সময় রাস্তায় কাটান তাঁরা প্রত্যেকদিন ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন সল্ট বা ওআরএস খেতে পারেন। এক লিটার জলে এই মিশ্রণটি মিশিয়ে অল্প অল্প করে খান। এই সময় প্রচুর জল ও ওআরএস পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে ডিহাইড্রশন বা শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যাওয়া এবং আনুষঙ্গিক সমস্যা রোধ করা যাবে। মাথায় রাখতে হবে, দোকানে যে সব কার্বোনেটেড সুইটেন্ড পানীয় (সফটড্রিংকস) পাওয়া যায় সেগুলো আপাতত স্বস্তি দিলেও তা কিন্তু শরীরকে সম্পৃক্ত করে না, বরং সেগুলো শরীরকে আরও জলশূন্য করে। তাই সেইসব পানীয় থেকে দূরে থাকায় বাঞ্চনীয়।
গরমের উপযোগী পোশাক পরুন
গরম এড়াতে গ্রীষ্মকালের উপযোগী পোশাক পরুন। সুতির হালকা জামাকাপড় পরুন। সঙ্গে এটাও মাথায় রাখতে হবে রোদে বেরোতে হলে কালো বা অন্য কোনও চড়া রঙের পোশাক না পরাই ভালো, কারণ খুব চড়া রঙের পোশাক বা কালো পোশাক পরলে গরম লাগে। ছোট হাতার হালকা রংয়ের পোশাক বেছে নিন। লম্বা হাতার খুব আঁটোসাঁটো পোশাক পরবেন না, কারণ এই ধরণের পোশাক পরলে আরও বেশি ঘাম হতে পারে। তার ফলে পোশাক থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়, যা অনেক সময় অন্যদের সামনে আমাদেরকে অস্বস্তিতে ফেলতে পারে। হালকা পোশাক পরলে যেমন খুব ঘাম হয় সঙ্গে বেরিয়ে যায় শরীরের ইলেক্ট্রোলাইটও।
রোদ এড়িয়ে চলুন
দুপুরের দিকে যতটা সম্ভব বাইরের কাজ কম করুন। চেষ্টা করুন বিভিন্ন কাজকর্ম চড়া রোদ ওঠার আগে অর্থাৎ সকালের দিকে সেরে ফেলতে বা রোদ পড়ে গেলে করুন। খুব প্রয়োজন না পরলে মোটামুটি দুপুর চারটে পর্যন্ত ছায়ায় থাকার চেষ্টা করুন।
প্রচুর জল ও ওআরএস পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলে ডিহাইড্রশন হয় না
ঠান্ডা ও ছায়ায় থাকুন
বাড়ির ভিতরে থাকলে চেষ্টা করুন ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে থাকতে। দুপুরের দিকে বাড়ির জানালা বন্ধ করে রাখুন। যাঁরা শীততাপ নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে থাকতে অভ্যস্ত তাঁদের পরামর্শ দেব, তাঁরা যেন এসির কড়া ঠান্ডায় না থাকেন। হালকা ঠান্ডায় থাকুন, না হলে অন্য সমস্যা হতে পারে।
ছাতা, রোদচশমা ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
রোদে বেরলে মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে ছাতা ও রোদচশমা পরুন ও একটা সানগার্ড ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। শরীরে অতিরিক্ত রোদের তাপ লাগলে ত্বকের যেমন ক্ষতি হয় ও ত্বকে খুব তাড়াতাড়ি বার্ধক্য দেখা দেয়। এ ছাড়া শরীর খুব ক্লান্তও লাগে। সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর (এসপিএফ) ১৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে সানগার্ড লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করুন। রোদে বেরোনোর প্রায় আধ ঘণ্টা আগে এই সানগার্ড লাগান। সানগার্ড মুখে লাগাতে ভুলবেন না কারণ শরীরর মধ্যে মুখ, গলা ও হাতে সব চেয়ে বেশি রোদ লাগে। সঙ্গে রাখুন রোদ চশমাও এবং একটা ছাতা।
তেল-মশলা কম খান
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত তেল-মসলা জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন। কখনও-সখনও ভারী খাবার বা তেল মসলা দেওয়া খাবার খেলেও, গরমকালে নিয়মিত হালকা খাবার খাওয়াই উচিৎ। খুব তৈলাক্ত বা ভারী খাবারদাবার খেলে সেই খাবার হজম করার জন্য আমাদের শরীরে অন্ত্রগুলো দ্রুত কাজ করতে শুরু করে, তখন বাড়তি তাপ উৎপন্ন হয় যা আমাদের শরীরকে গরম করে। এর ফলে আরও বেশি ঘাম হয়।
গ্রীষ্মকালে অতিরিক্ত গরম বা অতিরিক্ত তেল-মসলা জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকুন
যতটা সম্ভব বাড়িতে রান্না করা হালকা খাবার খান। পাশাপাশি সব সময় পেট ঠান্ডা রাখুন এবং বাইরের খাবার একটু কম খান। এই সময় ডায়েরিয়ার প্রকোপ খুব বেড়ে যায় তাই পুষ্টিকর খাবার দিকে নজর রাখুন যাতে পেট ঠিক থাকে ও ডায়েরিয়ার আশঙ্কা দূর হয়। ডায়েরিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর জল বেরিয়ে যায়। এই সময় হাসপাতালে বহু রোগী আসেন যাঁদের ডায়রিয়ার ফলে শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে গেছে বলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে।
শিশু ও প্রবীণদের দিকে নজর দিন
এই সময় বাচ্চা, প্রবীণ, অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা রয়েছে এমন ব্যক্তি, যাঁরা হৃদরোগে ভুগছেন এবং যাঁদের রক্তচাপের সমস্যায় রয়েছে তাঁদের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। এ ছাড়াও এই সময় নজর দিতে হবে তাঁদের দিকে, যাঁরা কোনও রোগের জন্য ওষুধ খাচ্ছেন, যেমন মনোরোগের ওষুধ বা অনিদ্রার ওষুধ কিংবা রক্তসঞ্চালনের কোনও ওষুধ।