মহিলাদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ ভারত- রিপোর্টের বিরোধিতা করল রাজ্য মহিলা কমিশন
“একজন ভারতীয় হিসেবে আমি কখনও মনে করি না যে ভারত মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়”
- Total Shares
নারী নির্যাতনের নিরিখে বসবাসের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ হল ভারত। হ্যাঁ। এই তথ্যই উঠে এসেছে দা থমসন রোয়েটর্স ফাউন্ডেশনের একটি সমীক্ষায়। গত মঙ্গলবার এই রিপোর্টটি প্রকাশিত হয়। সমীক্ষাটিতে ৫৫০ জন বিশেষজ্ঞের মতামতে ধর্ষন, নারী নির্যাতন ও এই ধরণের বিভিন্ন নির্যাতনের নিরিখে ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক দেশ। ভারতের পরেই রয়েছে আফগানিস্তান ও সিরিয়ার স্থান তারপর রয়েছে সোমালিয়া এবং সৌদি আরব৷
যদিও ২০১১ সালের সংস্থাটি যে রিপোর্ট প্রকাশ করে তাতে ভারতের স্থান ছিল চার নম্বরে।যদিও আমার জানিনা সংস্থাটি ঠিক কী পদ্ধতি অবলম্বন করে তালিকাটি তৈরি করেছেন।
তবে যেমন অনেকাংশে আমি এই তালিকাটির সঙ্গে একমত নই আবার তেমনভাবেই এর একটা ভালো দিকও আমি দেখতে পাচ্ছি। বর্তমানে মহিলা তথা সাধারণ মানুষ অনেক বেশি সচেতন হয়েছেন। মহিলারা তাঁদের অধিকার সম্পর্কে অনেক বেশি সজাগ এখন। তাই তাঁরা এখন নিজেই এগিয়ে আসছেন ও অন্যায়ের বিরোধিতা করছেন।
তবে এ কথাটাও ঠিক যে এই রিপোর্টের মাধ্যমে কি সার্বিক চিত্রটা বোঝা সম্ভব নয়। সবটা বলা যায় না। একজন ভারতীয় হিসেবে আমি কখনও মনে করি না যে ভারত মহিলাদের জন্য নিরাপদ নয়। আমি নিজেও বিভিন্ন দেশে গিয়েছি আমারও এ ব্যাপারে খানিকটা অভিজ্ঞতা আছে। বাইরের দেশগুলো যে মহিলাদের জন্য একদম নিরাপদ এমনটা কিন্তু নয়। এমন অনেক উদাহরণ রয়েছে যেগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে পারে যে বাইরের দেশগুলো মহিলাদের জন্যও সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। বাইরের দেশেও মহিলাদের বিভিন্ন নিরাপত্যহীনতার মধ্যে দিয়ে দিনগুজরান করতে হয়।
সমীক্ষাটি কিসের ভিত্তিতে করা হয়েছে সেটা আমার জানা নেই।আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মহিলারা আজ সাফল্যের শিখরে রয়েছেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন পেশায় মহিলাদের সংখ্যাটা দেখলেই একটা কথা পরিষ্কার হয় যে আমাদের দেশ যদি মহিলাদের জন্য নিরাপদ না হতো তাহলে এ দেশের মহিলারা হয়তো এতটা উন্নতি করতে পারতেন না।বা সমস্ত দিকে এতটা এগিয়ে যেতে পারতেন না কিংবা পুরুষদের সঙ্গে সমান তালে পায়ে পা মিলিয়ে কাজ করতে পারতেন না তাঁরা। বিভিন্ন মাধ্যমে আমাদের দেশের মহিলারা পুরুষদের থেকে কোনও অংশে পিছিয়ে নেই বরং অনেক ক্ষেত্রে মহিলারা অনেক বেশি এগিয়ে।দেশের পথঘাট নিরাপদ না হলে মহিলারা বাড়ির বাইরে বেরিয়ে বিভিন্ন কাজেও যোগ দিতে পারতেন না। আমাদের দেশের ইতিহাসের পাতায় পাতায় ভারতীয় মহিলাদের সাফল্যের কথা বলা রয়েছে। এখন মহিলারা তাদের অবগুন্ঠন ভেঙে বাইরে বেরিয়ে অন্যায়ের সঙ্গে লড়াই করছেন।
আমি আরও একটা কথা মনে করি সেটা হল যে দেশ এই রিপোর্টই তৈরি করেছে তাদের পক্ষে ভারতীয় মূল্যবোধ এবং সম্পর্কের বন্ধন বোঝা সম্ভব নয়। তাদের সম্পর্কের জায়গাটাও বেশ গোলমেলে। ভারতীয়দের মূল্যবোধ কিংবা একে ওপরের সঙ্গে জগত খুব গভীর।
আগে মহিলারা এখানে আসতে একটু কুন্ঠা বোধ করতেন কিন্তু এখন তাঁদের এই কুন্ঠাবোধটা অনেকটা কেটে গেছে। মহিলা কমিশনে এখন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মহিলারা আসেন। রিপোর্টটি ৫৫০ জন বিশেষজ্ঞের মতামতের ভিত্তিতে বানাবো হয়েছে। আমার মনে হয় আমাদের বিশ্বে এতো গুলো দেশ রয়েছে আর কোটিকোটি মহিলা রয়েছেন তাঁদের কথা কিংবা সেই দেশের মহিলাদের ঠিক পরিস্থিতিতেই বা ঠিক কেমন সেটা শুধুমাত্র ৫৫০জন নির্ধারণ করতে পারেন কী? এটা অসম্ভব।