নানা পাটেকরের নামে অভিযোগ নিয়ে তনুশ্রীর পাশে নাকি বিরুদ্ধে?
যৌন হেনস্থা শুরু হয় আমাদের পরিবার থেকেই
- Total Shares
সময় যবে থেকে শুরু হয়েছে তবে থেকেই যৌন হেনস্থাও শুরু হয়েছে। যৌন হেনস্থা শুরু হয় আমাদের পরিবার থেকেই। এমন কোনও যৌথ পরিবার নেই বা ছিল না যেখানে কোনও যৌন হেনস্থাকারী ছিল না – মামা, কাকা, বাবা – কেউ না কেউ ছিলই। সকলেরই শৈশবরের এমন স্মৃতি আছে। সেই ঘটনা ইচ্ছাকৃত কেউ ঘটিয়ে থাকতে পারেন পা অনিচ্ছাকৃত। এটা আমাদের প্রকৃতির অঙ্গ। এটা চলতেই থাকবে, কোনও দিনও বন্ধ হবে না।
যৌন হেনস্থা যে শুধু চলচ্চিত্র জগতেই আছে, এমন নয়। আগে কাস্টিং কাউচ বলত, এখন অন্য নাম দিয়েছে, পরে আবার তার অন্য কোনও নতুন নাম হয়তো হবে। এই ঘটনা বাণিজ্যিক ছবিতে ঘটে, সংবাদপত্র অফিসে ঘটে, এই ঘটনা সর্বত্র ঘটে। কোনও কেউ যদি প্রচার চান, তা হলে তিনি প্রকাশ্যে সেই ঘটনা নিয়ে বলেন।
তনুশ্রী দত্ত: দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পুরোনো সেই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে (ফাইল চিত্র)
তনুশ্রী দত্ত সম্প্রতি যে কথা বলেছেন, সেই কথা বলার অর্থ এই নয় যে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত। তাঁর এটিকে আরও ভালো ভাবে সামলানো উচিত ছিল। তনুশ্রী নানা পাটেকরের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছেন। এর অর্থ এই নয় যে তিনি কাজটি করছেন, আবার এ কথাও বলছি না যে তিনি এ কাজ করেননি। তনুশ্রী খুব ভালো অবস্থান নিয়েছিলেন, তিনি এই পেশাই ছেড়ে দেন। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে পুরোনো সেই ঘটনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।
এখন ধর্ষণের ঘটনার অভিযোগ হচ্ছে, তারপরে কী হচ্ছে? অভিযুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রকাশ্যে ও জনসমক্ষে কত ঘটনা ঘটছে, সেই ধরনের ঘটনা সামলানোর কৌশল রপ্ত করতে হবে। তনুশ্রী খুব ভালো মেয়ে। নানাও তো খারাপ ছেলে নয়। তাই ঠিক কী ঘটেছিল তা আমরা কেউই বলতে পারব না।
আইভি শশী ও রাজেশ খান্নার কথা আমরা জানি, সেটা একেবারে তাঁদের পেশাজীবনের গোড়ার কথা। সেই নতুন অভিনেত্রীর কেরিয়ারটাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। এই ধরনের ঘটনা আগেও ঘটেছিল।
অনেকেই জানতে চাইছেন আগে কেউ সাহস করে বলতে পারতেন না, এখন সকলে সাহস করে বলছেন। একটা গ্রামের মেয়ের কথা ভাবুন, সে কাকে বলবে? সে যদি তার মাকে গিয়ে ঘটনার কথা বলে তা হলে তার মা তাকে কতটা সাহায্য করতে পারবেন? একটা অফিসে এমন ঘটনা ঘটলে তখনই বা সেই অফিসকর্মী কাকে সেই ঘটনার কথা জানাবে? বাড়িতে গিয়ে এমন কথা বলতে গেলে হয়তো সেখানেও গঞ্জনা শুনতে হবে! আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারব না।
নানাকে মন্দ বলতে রাজি নন তিনি (ফাইল চিত্র)
সমকামিতাকে যে অপরাধের তকমা-মুক্ত করা হয়েছে সে জন্য আমি খুব খুশি হয়েছি। আমি একটা আলোচনাসভায় গিয়েছিলাম। সেখানে ১২ জন সমকামী ছিলেন যাঁদের কেউ খেলোয়াড়, আমাকে যে মহিলা আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তিনি নিজেও ছিলেন সমকামী। কিন্তু সেদিনের সেই আলোচনায় সমকামিতা নিয়ে একটা কথাও কেউ বলেননি, বিশ্বের অন্য নানা বিষয়ে সেখানে আলোচনা হয়েছিল – শিল্পকলা, খেলা, ছবি – দুর্দান্ত সেই আলোচনা। কেউ কারও কাঁধে পর্যন্ত হাত রাখেননি। সমকামিতার মধ্যে খারাপ কিছু নেই।
আমি এখন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত, সাংসদ। তারপরেও বলছি, এর মধ্যে অস্বাভাবিকতা কিছু নেই, তাঁরাও স্বাভাবিক, তাঁদেরও মেধা আছে, অন্তর আছে, চিন্তাশক্তি আছে। তাঁরা তো কারও সমস্যার কারণ হচ্ছেন না!
সমস্যা তাঁদের মা-বাবাকে নিয়ে। পাড়াতে কী বলবে! তাড়াতাড়ি ছেলের বিয়ে দিয়ে দাও। তারপরে তা নিয়ে সমস্যা শুরু হয়ে যায়। দুই সন্তান হওয়ার পরে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। তারপরে তিনি তাঁর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পেয়েছেন। এই ঘটনার কথাও আমরা জানি।
এখনও আরেকটি সমস্যা রয়েছে, মহিলাদের পোশাক পরে যাঁদের আমরা এখনও পথে পথে ঘুরতে দেখি। এমন একদিন আসবে যেদিন তাঁরাও মূল স্রোতে ফিরবেন।