হারানো চোখের সৌন্দর্য ফেরাতে 'কাস্টম মেড' কৃত্রিম চোখের ব্যবহার

চোখ নষ্ট হয় যাওয়ার ছ'সপ্তাহের মধ্যে কৃত্রিম চোখ লাগানো যেতে পারে

 |  2-minute read |   04-07-2018
  • Total Shares

জন্মগত কিংবা কোনও দুর্ঘটনার জন্য যাঁরা নিজেদের একটি চোখ হারিয়েছেন বা কোনও কারণে চোখটি তুলে ফেলতে হয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে চক্ষু প্রতিস্থাপন করলে তাঁদের মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে দেবে কৃত্রিম চোখ।

অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন কৃত্রিম চোখ লাগালে মুখের অবয়বের কোনও তারতম্য হয় কি না? তাঁদের উদেশ্যে বলি কৃত্রিম চোখ লাগালে মুখের গড়নে কোনও অস্বাভাবিকতা আসে না বরং মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরে আসে।

body1_070418074626.jpg

বেশ কিছু বছর আগে পর্যন্ত ভালো পাথর ব্যবহার করে কৃত্রিম চোখ বানানো হতো, তারপর শুরু হল ভালো প্লাস্টিক দিয়ে চোখ বানানো। আর এখন কৃত্রিম চোখটিকে একদম আসল চোখের মতো দেখানোর প্রচেষ্টায় বিভিন্ন বিদেশী সামগ্রী ব্যবহার করে এই চোখ বানানো হয়ে থাকে, যেমন এখন কানাডিয়ান সামগ্রী দিয়ে চোখ তৈরি করা হয়।

চিকিৎসাবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে এখন একধরেন কৃত্রিম চোখ বসানো হয় যাকে ইংরেজিতে 'কাস্টম আই বা কাস্টম মেইড কৃত্রিম চোখ' বলা হয়। খুবই উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে এই চোখ বানানো হয় বলে চোখটি বসানোর পর মুখের কোনও পরিবর্তন হয় না বরং চোখের জায়গাটা পূর্ণতা পেলে মুখশ্রী সুন্দর লাগে।

এই চোখ ইচ্ছেমতো ডান-বা ও ওপর-নিচ ঘোরানো যায়। আসল চোখ আর নকল চোখের মধ্যে কোনও ফারাক করা যায় না। ইচ্ছে হলে চোখটি রোজ খোলা-পরা করা যাবে কিংবা একটানা একমাস পর্যন্ত চোখটি পরে থাকা যাবে। কৃত্রিম চোখ লাগানোর ফলে কোনও রকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় না।

body2_070418074638.jpg

দোকানে যে রেডিমেড কৃত্রিম চোখ পাওয়া যায় সেগুলোর থেকে একেবারে আলাদা হয় কাস্টম আই। কারণ বিভিন্ন ব্যক্তির চোখের মণির রঙ এবং মাপ ভিন্ন। কাস্টম আই একজন ব্যক্তির চোখের রং ও মাপ নিয়ে বানানো হয় বলে একদম আসল চোখের মতো দেখতে লাগে। এটা   রেডিমেড কৃত্রিম চোখের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। কাস্টম চোখ বানাবার সময় অকেজো চোখের অখিগুলোর মাপ নিয়ে নকল চোখটি তৈরি করা হয়। রেডিমেড চোখ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাদা হয়।

কোনও দুর্ঘটনায় চোখ নষ্ট হয় যাওয়ার ছ'সপ্তাহের মধ্যে কৃত্রিম চোখ লাগানো যেতে পারে। চিকিৎসক হিসেবে আমার পরামর্শ হল যদি কেউ মনে করেন কৃত্রিম চোখ ব্যবহার করবেন তাহলে তাতে খুব একটা দেরি করা উচিত নয় কারণ দেরি করলে চোখের চারপাশের পেশী শক্ত হয়ে গিয়ে সংকুচিত হয়ে যেতে পারে ফলে চক্ষু প্রতিস্থাপনের সময় বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।

body3_070418074704.jpg

এছাড়াও কাস্টমকুলার প্রস্থেসিস, লাইটওয়েট প্রস্থেসিস, সেলফ লুব্রিকেটিং প্রস্থেসিস, সিলিকন শেল আইরিস পাইনটেড কনফর্মার প্রভৃতি চিকিৎসার মাধ্যমেও চক্ষু প্রতিস্থাপন করা হয়।

এখন যেহেতু অত্যাধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে কৃত্রিম চোখ প্রতিস্থাপন করা হয় তাই চোখের পিচুটি পড়া বা চোখ থেকে জল গড়ানোর সমস্যা প্রায় হয় না বললেই চলে। আগে চোখ প্রতিস্থাপন করাটা একটা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার ছিল কিন্তু এখন একদিনের মধ্যেই রোগীকে তাঁর চোখের মাপ নিয়ে সেদিনই তাঁর চোখ লাগিয়ে দেওয়ার হয়।

আর একটা বিষয় হল, আগে হাতের সাহায্যেই কৃত্রিম চোখ খোলা-পড়া করা হতো কিন্তু এখন এক ধরণের বিশেষ যন্ত্র পাওয়া যায় যাকে প্ল্যাংগার বলা হয় তা দিয়ে চোখ খোলা ও পরা হয়।

body4_070418074715.jpg

ক্যান্সারের কারণে যাঁদের চোখ সমূর্ণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে অনেক সময় তাঁদের কৃত্রিম চোখ বসানোর জায়গাও থাকে না তখন তাঁদের ক্ষেত্রে ফেসিয়াল প্রস্থেসিস অর্থাৎ চোখের পাতা, চোখের পাপড়ি তৈরি করে বসানো হয়।

তাই আর কালো চশমার আড়ালে নিজের চোখকে লুকিয়ে রাখতে হবে না।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

DR. SUBHASHISH CHAUDHURI DR. SUBHASHISH CHAUDHURI

Low Vision Specialist

Comment