'মুল্ক' ও 'পিঙ্ক'-এর পাশাপাশি দর্শক টানতে তাপসী পান্নুকে 'জুড়ুয়া-২'-এর মতো ছবিও করতে হবে
গোটা অভিনয় জীবনে এই চরিত্রটি করার সময় প্রথমবার তিনি আতঙ্কিত হয়ে পড়েন
- Total Shares
এখনও পর্যন্ত তাপসী পান্নু ২৩টি ছায়াছবিতে অভিনয় করেছেন যার মধ্যে সব চেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে জুড়ুয়া-২। ছবিটি গত বছর মুক্তি পায়।
তবে ভালো অভিনেত্রী হিসেবে তাঁর সব চেয়ে জনপ্রিয় দুটি ছবি হল 'পিঙ্ক' এবং 'নাম শবানা'। এই ধরণের আরও ছবি তিনি তাঁর অভিনয় তালিকায় যোগ করতে চান।
শুক্রবার মুক্তি পেলো তাঁর ২৪ তম ছবি 'মুল্ক'। ছবিটির পরিচালনা করেছেন অনুভব সিনহা। সুবিচারের জন্য একটি মুসলমান পরিবারের লড়াইকে ঘিরেই ছবিটি তৈরি হয়েছে।
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের ১৪ তারিকে ভারতে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচিত্র উৎসবে অনুরাগ কাশ্যপ পরিচালিত ছবি 'মনমার্জিয়া'-র প্রিমিয়ার শো দেখানো হবে। একটি প্রেমের গল্প। তাপসী পান্নু অভিনীত ২৫ তম ছবি 'মনমার্জিয়া'।
সম্প্রতি আর একটি ছবি 'বদলা'-র শুটিং শেষ হল। তিনি ছাড়াও ছবিটিতে অভিনয় করেছেন অমিতাভ বচ্চন। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে আসবে পরের বছর।
এছাড়াও তাঁর অভিনয়ের ঝুলিতে রয়েছে আরও দুটি তেলেগু ছবি।
“আমার ছবি যখন মুক্তি পায় তখন সেই শুক্রবার আমি খুব ভয়ে থাকি"
“আমার শুটিংয়ের তালিকা ঠিকঠাক সাজাতে পারে না বলে আমার ম্যানেজারকে বকাঝকা করি। আমার ম্যানেজার আমাকে বলেন যে সে বুঝতে পারেন না যে আমি কী করে এতোগুলো কাজ সামলাব। আমি কোনও কাজ ফেরাতে চাই না সবকটা কাজ করতে চাই। এই সিনেমাগুলো হয়তো খুব একটা বড় বাজেটের নয় কিংবা সিনেমাগুলোতে কোনও বড় তারকারাও অভিনয় করছেন না। ছবিগুলোর শুটিংও খুব তাড়াতাড়ি শেষ করে ফেলা হয়।"
'মুল্ক' ছবিটিতে তাপসী পান্নু ছাড়াও আরও অনেকে অভিনয় করেছেন। ছবিটিতে তাপসী পান্নুর চরিত্রের নাম আরতি মহম্মদ যে লন্ডন প্রবাসী ভারতীয় মহিলা। তিনি ভারতে তাঁর শশুরবাড়িতে ঘুরতে এসে তাঁর শশুড়বাড়ির হয়ে একটি মামলাও তাঁকে লড়তে হয়।
তাপসী পান্নুর শশুরের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অভিনেতা ঋষি কপূর।
অনেকগুলি সত্যি ঘটনা অবলম্বনে বানানো এই ছবিটি। আমাদের দেশে সংখ্যালগুদের কীভাবে প্রান্তিক করে দেওয়া হচ্ছে ক্রমশই এবং তাঁরা যে ভারতীয় নাগরিক সেই প্রমানও পদে পদে তাঁদের দিতে হচ্ছে, এই নিয়েই পরিচালক অনুভব সিনহা তাঁর এই ছবিটি বানিয়েছেন।
জনপ্রিয়তা ছায়াছবি জুড়ুয়া-২
তাপসী পান্নু বলেন, “পিঙ্ক সিনেমার মতোই এই ছবিটিতেও অনেকগুলো সামাজিক দিককে খুব হালকা করে ছুঁয়ে গেছেন পরিচালক।”
তিনি বলেন যে তাঁর গোটা অভিনয় জীবনে এই চরিত্রটি করার সময় তিনি প্রথমবার আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন।
“ছবিটিতে এমন অনেক দৃশ্য আছে যেসব দৃশ্যে অভিনয় করার সময় আমার শরীরটা কাঁপছিল।"
“শুটিংয়ের সময় পাঁচ থেকে ছ'টা ক্যামেরা একসঙ্গে চলছিল। কোর্টরুমের দৃশ্যে আশুতোষ রানা, রজত কাপূর, ঋষি কাপূর এবং নীনা গুপ্তার মতো অভিজ্ঞ অভিনেতাদের সামনে আমাকে পাঁচ-ছয় পাতার বড় ডায়লগ একবারে বলতে হতো।"
ছবিতে যাঁরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছিলেন তাঁদের বেশিরভাগই নাটক এবং থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত সব অভিজ্ঞ অভিনেতা ও অভিনেত্রী যাঁদের কাছে কোনও পাঠই খুব একটা কঠিন নয় তাই এই ধরণের জাত অভিনেতাদের সঙ্গে অভিনয় করাটাই ছিলো বেশ আতঙ্কের বিষয়। তাঁর অভিনয় জীবন শুরু হয় ২০১০ সাল থেকে। ইতিমধ্যেই তিনি যদিও ছাড়তে ভাষায় অভিনয় করেছেন কিন্তু তিনি স্বীকার করেন যে এখনও বলিউডে তিনি নিজের একটা শক্ত জায়গা বানাতে পারেননি।
“যদি সিনেমাটা না চলে তাহলে তো আমি আর কোনও ভালো সিনেমা পাব না"
তিনি বলেন, “আমার ছবি যখন মুক্তি পায় তখন সেই শুক্রবার আমি খুব ভয়ে থাকি।"
“যদি সিনেমাটা না চলে তাহলে তো আমি আর কোনও ভালো সিনেমা পাব না। তখন সবাই বলবে অভিনেত্রী হিসেবে ওঁ ভালোই তবে ওঁর সিনেমাগুলো চলে না। তখন সবাই হয়তো আমাকে ভালো অভিনেতা বলবে তবে কোনও মূলধারার ছবির প্রধান মহিলা চরিত্র হিসেবে আমার নাম হবে না।"
তাই হয়তো তাপসী পান্নুর অভিনয় জীবনে জুড়ুয়া-২-র মত দু'একটা মূলধারার ছবিও করা প্রয়োজন যাতে তিনিও কিছু সংখক দর্শক পান এবং মূলধারার ছবিগুলোও ছাড়াও তাঁর অন্যান্য ছবিগুলো তাঁরা দেখতে উৎসাহী হন।
“অভিনেতা হিসেবে আমি নিজেকে তখনই বেশ সুরক্ষিত মনে করব যখন দেখব যে শুধু মাত্র সিনেমায় আমি অভিনয় করেছি বলেই সেটা একটা ভালো সিনেমা হবে সেই বিশ্বাসে আমার দর্শকরা ছবিটা দেখতে যাবেন।"
লেখাটি ইংরেজিতে পড়ুন