মন ভালো রাখার টোটকা সঙ্গে রয়েছে একটি সামাজিক বার্তা, এই নিয়ে তৈরি হয়েছে 'হ্যাপি পিল' ছবিটি
‘আশপাশটা দেখলে মনে হয়, কেউ ভাল নেই’
- Total Shares
আমার নতুন ছবি ‘হ্যাপি পিল’। ‘হ্যাপি পিল’-এর চিত্রনাট্য আমারই লেখা।
আমার ছবির হ্যাপিওয়ালা নিজের মায়ের মনটা ভালো করার জন্য একটা ওষুধ বানাবে। এমন একটা ওষুধ যা খেলে মানুষের মন এক নিমেষে ভালো হয়ে যায়, মন ভালো করার জন্য আলাদা করে কোনও জিনিসের প্রয়োজন পড়বে না তাঁর।
আমার আগের ছবিগুলোর থেকে এই ছবিটা বেশ কিছুটা ভিন্ন স্বাদের কারণ এখানে একটা সামাজিক বার্তা রয়েছে। এত দিন আমি যে ধরণের ছবি বানিয়েছি এবার সেই ছক ভেঙে একটা অন্য ধারার ছবি তৈরি করেছে। আমাদের চারপাশের মানুষজনের কাছে তাঁদের সাধের সবরকম জিনিস থাকা সত্ত্বেও তাঁরা কিন্তু খুশি নন। সবাই যেন 'আরও চাই আরও চাই'। কারোও হয়তো একটা স্মার্টফোনের প্রয়োজন কারও হয়তো একটা চাকরির প্রয়োজন কারও হয়তো একটা বাড়ি বা গাড়ির প্রয়োজন আবার কারোও হয়তো একটা প্রেমিকার প্রয়োজন। এখন আর আমাদের মন অল্পতে তুষ্ট হয় না।
মন খারাপ হলে আমাদের অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট হল দেদার কেনাকাটা করা। তবে আমরা যেটা বুঝি না সেটা হল এই সবকিছুই সাময়িক। কোথাও গিয়ে আমরা ভুলে যাই যে মনটাকে ভালো রাখাটাই হল আসল কথা কোনও কিছুর বিনিময় নয়। নিজেকে ভালো রাখাটাই হল আসল ব্যাপার। হামেশাই আমরা আমাদের চারপাশে এইধরণের মন খারাপ হয়ে থাকা মানুষজনদের দেখতে পাই। ভালোর থেকেও আরও ভালো হয়, ভালোর কোনও শেষ নেই।
তাই তার পেছনে না ছুটে নিজেদের মনটাকে শান্ত করতে হবে। আশপাশটা দেখলে মনে হয়, কেউ ভাল নেই। পাশাপাশি জীবনের ইঁদুরদৌড় থেকে বেরোতে হবে। তাই ছবির সবকটি চরিত্রই বাস্তব থেকে নেওয়া।
ছবিটির মাধ্যমে আরও একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে সেটা হল কোনও মানুষ যদি তাঁর পেশা জীবনে তেমন সাফল্য লাভ করতে না পারেন তাহলে সেই মানুষটাকে অকর্মন্য বলে ধরে নিয়ে তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করাটা কোনও কাজের কথা নয়। সেই মানুষটির ভেতরে হয়ে লুকিয়ে বসে আসে একটা খুব ভালো মনে মানুষ যাঁর আন্দন্দে থাকতে বড় কোনও জিনিসের প্রয়োজন পরে না। আমাদের শহরে বহু পাড়ায় হয়তো একটা করে পঁচাদা বাস করেন যিনি তাঁর জীবনে তেমন কিছু একটা করতে পারেননি এবং সর্বক্ষণ বৌয়ের বকুনি খেয়ে চলেছেন। সেই ব্যক্তিটি চূড়ান্ত অসফল হলেও আসলে কিন্তু তিনি একটি নিপাট ভালো মানুষ। কিংবা একটি শ্যামবর্ণ অল্পবয়সী মেয়ে যে ফর্সা হতে চায় তাই টিভিতে যখনই কোনও ফর্সা হওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে সেটা কিনে সে মাখে।
ছবিতে মূল চরিত্র অভিনয় করেছেন ঋত্বিক চক্রবর্তী এছাড়াও অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন সোহিনী সরকার, পার্নো মিত্র এবং মীর।
ছবিতে ঋত্বিকের চরিত্রের নাম সিদ্ধার্থ। ছবির সিদ্ধার্থ একজন মেধাবী মেডিক্যালের ছাত্র ছিল যে টাকার অভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেনি শেষ পর্যন্ত। তাঁর মাও অসুস্থ এবং বিভিন্ন কারণে তাঁর মন সবসময়েই উদাস হয়ে থাকে। মায়ের মনকে ভালো করার জন্য তাঁর ছেলে একটি ওষুধ তৈরি করবে।
গল্পটা খুবই সাদামাঠা তবে এর মধ্যে থেকে যে সামাজিক বার্তাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি সেটা যদি আমার দর্শকের মনে একটু হলেও দাগ কাটতে পারে তাহলে আমার এই ছবিটা সার্থক হয়েছে বলে আমি মনে করব।