অতীত, ভূত, বর্তমান এবং অলৌকিকতা নিয়ে তৈরি বাংলা ছবি 'কুয়াশা যখন'
টলিউডে এই ধরণের ছবি খুব একটা হয় বলে আমার মনে হয় না
- Total Shares
অলৌকিক প্রেমের কাহিনী 'কুয়াশা যখন’। ভূত, রহস্য ও অলৌকিকতা নিয়ে এই বাংলা ছবিটি আমার সঙ্গে সহপরিচালনা করেছেন অভিষেক। চিত্রনাট্যটিও আমাদের লেখা। পরিচালক হিসেবে এটা আমাদের প্রথম ছবি।
এটি একটি ভিন্ন স্বাদের প্রেমের গল্প। টলিউডে এই ধরণের ছবি খুব একটা হয় বলে আমার মনে হয় না। অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেছেন যে কেন প্রথম ছবিতেই অতিলৌকিক বিষয়কে বেছে নিয়েছিলাম আমরা। 'কুয়াশা যখন' মূলধারার বাণিজ্যিক ছবিগুলোর মতো নয় একেবারেই। এই ধরণের বিষয়বস্তু নিয়ে কোনও ছবি বানালে অনেক সময় তা খুব একটা জনপ্রিয়তা লাভ নাও করতে পারে। 'অকাল্ট' ও 'প্যারানর্মাল' বিষয় নিয়ে আমি দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করছি। আমার গবেষণার একটা প্রধান বস্তু হল জন্মান্তর এবং মৃত্যুর পরেও যে একজন আর একটা জীবনে প্রবেশ করে তা নিয়ে। তবে মূলত এটি একটি প্রেম কাহিনী।
'কুয়াশা যখন' ছবির একটি দৃশ্য
গবেষণা করতে গিয়ে আমি এমন বহু ঘটনা দেখেছি। তেমন কয়েকটি ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা এই ছবিটি বানিয়েছি। অবশই সেই সব ঘটনাক্রমকে একটু নাটকীয় রূপ দেওয়া হয়েছে। আমি এবং অভিষেক আমরা দুজনেই সিনেমাপ্রেমী, তাই যখন ছবি বানাব ঠিক করলাম তখন মনে মনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে আর পাঁচটা বাণিজ্যিক ছবির মতো কোনও ছবি তৈরি করব না। এমন কিছু নিয়ে ছবি বানাব যেটা দর্শক আগে খুব একটা বড় পর্দায় দেখেনি।
'কুয়াশা যখন' ছবির একটি দৃশ্য
১৯৬০ সালের একটি পরিত্যক্ত জমিদার বাড়িকে বর্তমানে একটি হেরিটেজ হোটেলে রূপান্তরিত করা হয়। তবে ওখানে যাঁরা থাকেন তাঁরা কয়েকদিনের মধ্যেই বেশ কয়েকটি অলৌকিক বা ভুতুড়ে ঘটনার অভিজ্ঞতা করেন। তাই বাড়িটিকে শোধন করার জন্য তাঁরা একজন ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন যিনি অকাল্ট বা প্রেতশাস্ত্র নিয়ে চর্চা করেন। বাড়িটি শোধন করতে এসে তিনি বহু গা ছমছম করা রহস্য জানতে পারেন। পাশাপাশি তিনি জানতে পারেন যে এই বাড়িটির ইতিহাসের সঙ্গে তিনিও ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছেন।
ছবি জুড়ে রয়েছে টান টান উত্তেজনা। অতীত ও বর্তমানকে তুলে ধরতে ছবিটির অনেকটা অংশ সাদা-কালোতে শুট করা হয়েছে।
এখনও পর্যন্ত যাঁরা এই ছবিটি দেখেছেন তাঁদের বেশিরভাগেরই ছবিটির প্রশংসা করেছেন।
'কুয়াশা যখন' ছবির একটি দৃশ্য
গোড়া থেকেই যদিও আমরা ভেবেছিলাম যে ছবিতে অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরীকে নেওয়া হবে, তবে দুর্ভাগ্যবশত তিনি আমাদের সঙ্গে তেমন একটা সহযোগিতা করেননি। ছবির প্রচারের সময়ও আমরা তাঁকে পাশে পাইনি। ঠিক একই কারণে ছবির শেষটাও বদলাতে বাধ্য হই।
ছবিতে অভিনেতা সাতাফ ফিগার বা অন্যান্যদের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতাটা ততটাই ভালো ছিল।
'কুয়াশা যখন' ছবির একটি দৃশ্য
এখনও পর্যন্ত ছবিটির জন্য আমরা তিনটে পুরস্কার পেয়েছি।
'কুয়াশা যখন' ছবির একটি দৃশ্য
সিনেমায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন গার্গী রায় চৌধুরী, মানালি দে, শতাফ ফিগার, অনিন্দ্য পুলক, সুদেষ্ণা রায় এবং ঋষভ বসু। ছবিতে সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন চিরন্তন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং গান গেয়েছেন গায়ক রূপঙ্কর বাগচী।