চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন প্রয়াত

ভূবন সোম ছবিতে নেপথ্য কণ্ঠ ছিল অমিতাভ বচ্চনের

 |  4-minute read |   30-12-2018
  • Total Shares

বাংলা চলচ্চিত্রমহলে সত্যজিৎ রায় ও ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে চিরকাল যে নাম উচ্চারিত হয়ে এসেছে, সেই নামটি আর কারও নয়, মৃণাল সেনের। একবার একটি সাক্ষাৎকারে মৃণাল সেন বলেছিলেন, ৮-৯ বছর বয়সে তিনি প্রথম চার্লি চ্যাপলিনের ছবি দেখেন। তারপরে একটু বড় হয়ে একে একে চার্লি চ্যাপলিনের সব ছবিই দেখে ফেলেন। তারপরে সেই ছবিগুলি দেখতে থাকেন বারে বারে।

জীবনে একবারই তিনি চার্লি চ্যাপলিনকে দেখেছিলেন, একটি চলচ্চিত্র উৎসবে যেখানে তাঁর কলকাতা ৭১ ছবিটি দেখানো হচ্ছিল। সেবার সেই প্রবাদপ্রতিম শিল্পীকে বলতে চেয়েছিলেন, তিনি তাঁর ছবির ভক্ত, সব ছবি দেখেছেন। কিন্তু সে কথা আর বলা হয়ে ওঠেনি।

mrinal_123018030134.jpgমৃণাল সেন (সৌজন্য: ইন্ডিয়া টুডে)

বাংলা ছবির জগতে অন্যতম সফল পরিচালক মৃণাল সেন যৌবনে বামপন্থী (সিপিআই) সংগঠনের সংস্কৃতিশাখার সঙ্গে যুক্ত হন। তিনি গণনাট্য সংগঠনেরও সদস্য ছিলেন। তিনি থিয়েটারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত ছিলেন। তবে মৃণাল সেনের কথাতেই, তিনি কোনওদিনও ছবি, মানে চলচ্চিত্রের কথা ভাবেননি। তবে জাতীয় গ্রন্থাগারে জার্মান তাত্ত্বিক লেখক রুদলগ আর্নহেমের ফিল্ম অ্যাজ আর্ট পড়ে তিনি চলচ্চিত্রের প্রতি আকৃষ্ট হন।

টালিগঞ্জ পাড়ায় যাতায়াত করতে করতে প্রথমে তিনি অডিয়ো-টেকনিসিনায়েন কাজ করতে শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে মুক্তি পায় তাঁর প্রথম ছবি রাত-ভোর। উত্তম কুমার ও সুচিত্রা সেন অভিনীত ছবিটি কোনও সাড়াই জাগাতে পারে, যাকে বলে ফ্লপ। তারপরে তাঁর ছবি নীল আকাশের নীচে মুক্তি পায় চার বছর পরে। এই ছবিই তাঁকে পরিচিতি এনে দেয়।

mi-647_051416124425_123018030321.jpgমৃণাল সেন, সেই চেনা ভঙ্গিতে (সৌজন্য: ইন্ডিয়া টুডে)

আন্তর্জাতিক পরিচিতি লাভ করেন বাইশে শ্রাবণ ছবির জন্য। ছবির মূল উপজীব্য ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষযাত্রায় পদপিষ্ঠ হয়ে এক শিশুর মৃত্যু। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬০ সালে। পরের বছরই পুনশ্চ ছবির জন্য তিনি পুরস্কৃত হন। ছবিটি সেরা বাংলা ছবি হিসাবে জাতীয় পুরস্কার পায়।

১৯৬৯ সালে তাঁর হিন্দি ছবি ভূবন সোম-এ নেপথ্য কণ্ঠের জন্য ব্যবহার করেছিলেন অমিতাভ বচ্চনকে।

১৯৭১ সালে পশ্চিমবঙ্গ উত্তাল হয়েছিল নকশাল আন্দোলনে। সেই প্রেক্ষিতেই তিনি তৈরি করেন কলকাতা ৭১, ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭২ সালে। ১৯৭৬ সালে তাঁর মৃগয়া ছবিতে অভিষেক ঘটে মিঠুন চক্রবর্তীর, সেই ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কারও পান মিঠুন। ১৯৮০ সালে মৃণাল সেনের আকালের সন্ধানে চারটি জাতীয় পুরস্কার পায় এবং পরের বছর বার্লিন চলচ্চিত্র উৎসবে এই ছবিটি সিলভার বিয়ার পায়।

mrigaya_mithun_123018030414.jpgমৃগয়া ছবিতে মিঠুন চক্রবর্তী

অধুনা বাংলাদেশের ফরিদপুর জেলায় জন্ম (১৪ মে ১৯২৩) মৃণাল সেনের, ৯৫ বছর বয়সে ৩০ ডিসেম্বর কলকাতায় তাঁর জীবনাবসান হয়েছে।

তাঁর কলকাতা প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর এল-ডোরাডো-তে।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment