সঙ্গীতশিল্পী দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় স্মরণে

মাইকেল মধুসূদন দত্তের সনেট গেয়েছিলেন এই শিল্পী, শুনুন সেই গান

 |  2-minute read |   25-12-2018
  • Total Shares

সনেটে সুর করলে কেমন শুনতে লাগে? বাংলায় যে সনেট (চতুর্দশপদী কবিতা) লেখা যায় তা দেখিয়ে দিয়েছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। সেই সনেটে সুরারোপ করলেন সলিল চৌধুরী। আর গাইলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। যদিও সেই দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে কত জন মনে রেখেছেন বলা মুশকিল।

শ্যামল বরণী ওগো কন্যা/ এই ঝিরঝির বাতাসে ওঠা ওড়না...

যে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্র সঙ্গীতের জন্য জনপ্রিয়, যে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায় গেয়েছেন “জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিণী” সেই তিনিই আধুনিক গানে মন মাতিয়েছেন বাঙালির। বাংলা গানের স্বর্ণযুগ বলতে যে সময়কে বোঝানো হয়, সেই সময়ের শিল্পী ছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। জন্ম ১৯২৭ সালের ১২ নভেম্বর।

dwi_122518064231.jpgদ্বিজেন মুখোপাধ্যায়

সলিল চৌধুরীর সুরে যখন হেমন্ত মুখোপাধ্যায় একের পর এক জনপ্রিয় গান উপহার দিয়ে চলেছেন তখনই সেই সলিল চৌধুরীর শ্যামল বরণী ওগো কন্যা গাইলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়। তাঁর ভরাট গলা শুনে অনেকেই অবশ্য প্রথমে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় বলে ভুল করে ফেলেছেন।

মহালয়ার জাগো দুর্গা, জাগো দশপ্রহরণধারিণী গানটিও একসময় হেমন্ত মুখোপাধ্যায় গাইতেন, পরে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ব্যস্ততার জন্য সময় দিতে না পারায় তাঁর জায়গায় গানটি গাওয়ানো হয়েছিল দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে। তখন মহালয়ার সরাসরি সম্প্রচার হত। আমরা এখন যে মহালয়ার রেকর্ড শুনি, তাতে রয়ে গেছে দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়ের কণ্ঠই।

সঙ্গীতে অবদানের জন্য পদ্মভূষণ-সহ বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন স্বর্ণযুগের বাংলাগানের এই শিল্পী। রাজ্য সরকারের থেকে তিনি পেয়েছেন বঙ্গবিভূষণ সম্মান। পেয়েছেন আরও বহু সম্মান।

১৯৪৪ সালে পেশাদার শিল্পী হিসাবে কাজ শুরু করে সঙ্গীত জীবনে দেড় হাজার গান রেকর্ড করেছেন, যার অর্ধেকের বেশি রবীন্দ্রসঙ্গীত। আইপিটিএ-র সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তিনি সলিল চৌধুরীর সঙ্গে পরিচিত হন এবং “শ্যামল বরণী ওগো কন্যা” “পল্লবিনী গো সঞ্চারিণী” প্রভৃতি সলিল চৌধুরীর গান রেকর্ড করেন। গেয়েছেন হানিমুন, মায়া, মধুমতী প্রভৃতি ছবিতে। দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন আকাশবাণী কলকাতার সঙ্গেও। গানের সূত্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়েছেন।

৯১ বছরের প্রবীণ শিল্পী বয়সের ভারে বেশ কিছুদিন অশক্ত হয়ে পড়েছিলেন। ভুগছিলেন নানা শারীরিক সমস্যায়।

২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর তাঁর জীবনপ্রদীপ নির্বাপিত হয়। তাঁর শেষকৃত্য হয় পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়।

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment