ভালো গল্প নেই নাকি বাণিজ্যিক মোড়কের অভাব, কেন মার খাচ্ছে বাংলা ভূতের সিনেমা?

টলিউডেও এমন একটা দিন ছিল যখন রমরম করে চলেছে ভূতের সিনেমা

 |  2-minute read |   03-09-2018
  • Total Shares

নানা স্বাদের গোয়েন্দা সিনেমা বাঙালি দর্শকের চিরকালের পছন্দ, তা সে শরদিন্দু বন্দোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সী হন কী সত্যজিৎ রায়ের ফেলু মিত্তির। প্রধান চরিত্র বদলে গেলেও বক্স অফিস গোয়েন্দা গল্প কখনও মার খায় না, তাই ছবি মুক্তির আগের দিন ছবির প্রযোজক এবং পরিচালকের তেমন একটা উদ্বেগও থাকে না বললেই চলে। কারণ তাঁরা জানেন, চিত্রনাট্য নিয়ে তাঁরা কোনও ঝুঁকি নেননি।

আচ্ছা একটু মনে করে দেখুন তো সম্প্রতি কোন নতুন বাংলা ভূতের ছবি আপনি দেখেছেন? মনে পড়ছে? একটু চেষ্টা করুন নিশ্চয়ই মনে পড়বে। ঠিক আছে প্রশ্নটা একটু অন্যরকম ভাবে করি। এমন একটি বাংলা ভূতের ছবির নাম বলুন যেটা সাম্প্রতিককালে বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার সাফল্য পেয়েছে?

তবে আমি এখানে ২০১২ সালের অনীক দত্তর ছবি 'ভূতের 'ভবিষৎ' ছবির কথা বলছি না। যদিও সাম্প্রতিককালের ভূতের বা ভুতুড়ে ছবি বলতে গেলে 'ভূতের 'ভবিষৎ'-এর থেকে ভালো উদাহরণ হয়তো আর কিছুই হতে পারেন না, কারণ এই সিনেমায় প্রায় সবকটি চরিত্রই ভূত।

ছবিটিতে দুটি যুগকে দেখানো হয়েছে- পুরোনো আমল ও হালফিল সময়। পাশাপাশি উঠে এসেছে দু'টি যুগের সামাজিক প্রেক্ষাপট। ছবিটির পরতে পরতে ও সংলাপ এবং গানের মধ্যে দিয়ে চূড়ান্ত 'স্যাটায়ার' উঠে এসেছে। সত্যজিৎ রায়ের ছবির পর এতটা সরাসরি ভাবে সিনেমার মাধ্যমে সমাজ এবং সামাজিক পরিস্থিতির অবক্ষয়ের চিত্রটা অনেকদিন পরে বাঙালি দর্শক বোধহয় দেখল।

h_body_090318092339.jpg

হিন্দি ছবি 'পরি:নট আ ফেয়ারিটেইল', 'রাজ', '১৯২০', 'কৃষ্ণা কটেজ'-এর মতো বাংলা ভূতের ছবিগুলি বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করতে পারে না কেন? মূল ছবি তো পরের কথা টিজার এবং ট্রেলারই বাজার গরম করে রাখে। তাই খুব স্বাভাবিক ভাবেই দর্শকের মনে ছবিটিকে ঘিরে নানা কৌতূহল দানা বাঁধতে শুরু করে।

তা হলে যাকে আমরা 'মার্কেটিং গিমিক' বা ছবি মুক্তির আগে যথেষ্ট ভাবে বাণিজ্যিক মোড়ক দেওয়া হয়ে না?

না কি ভালো গল্পের অভাব?

ভূতে ভরা আমাদের বঙ্গদেশে আনাচে-কানাচে কত ভূতই না বাস করে। কোথাও আছে মামদোভূত, কোথাও শাঁকচুন্নি, কোথাও বা পেত্নী, ব্রহ্মদত্যি, মেছোভূত, পেঁচাভূত, ডাকিনি, যোগিনী, মোহিনী, স্কন্ধকাটা, নিশি, আলেয়া আরও কত! পরিচালকরা যেমন দেশী ভূতের সদ্ব্যবহার করতে পারছেন না তেমনই টোকা ফর্মুলাগুলো তেমন একটা কাজেও দিচ্ছে না।

কোনও মতে দক্ষ কয়েকজন অভিনেতার অভিনয় ক্ষমতা দিয়ে দর্শককে ধরে বেঁধে দু'আড়াই ঘণ্টা হলে বসিয়ে রাখা গেলেও তাঁরা একরকম মনে মনে ঠিক করে নেন যে এ ভুল আর করবেন না। আবার কখনও ছবি মার খায় যথেষ্ট পরিকল্পনা এবং যত্নসহকারে বানানো হয়ে না বলে। যেমন কিছু ভুতুড়ে ছবির ক্ষেত্রে তার দুর্বল স্পেশাল এফেক্ট ছবিটিকে ধরাশায়ী করে দেয়। রক্ত যদি কম দামি আলতা গোলা কিছুটা জল মনে হয় তাহলে আর যাই হোক না কেন হাড়টা ঠিক যেন হিম হতে চায় না।  

তবে ভূতের সিনেমার ক্ষেত্রে আমাদের টলিউডেও এমন একটা দিন ছিল যখন 'ভৈরোগ জাগো'-র মতো ছবিকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তৈরি হয়েছিল একের পর এক জনপ্রিয় বাংলা ভূতের ছবি -'কঙ্কাল', 'ক্ষুধিত পাষাণ', 'হানা বাড়ি', 'কুহেলি' প্রভৃতি।  

সে সব দিন কী আর ফিরবে না?  

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

Comment