‘উমা’- বাবা ও মেয়ের 'ইচ্ছাপূরণের' গল্প

মরণাপন্ন মেয়ের 'শেষ ইচ্ছে' মেটাতে সুদূর সুইৎজারল্যান্ড থেকে এদেশে আসেন বাবা

 |  2-minute read |   11-06-2018
  • Total Shares

পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের নতুন বাংলা ছায়াছবি 'উমা' দেখলাম। ছবিটি দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো। ছবিটিতে দেখানো হয়েছে যে একজন বাবা (যিশু সেনগুপ্ত) তাঁর  মরণাপন্ন মেয়ে (সারা সেনগুপ্ত) উমার 'শেষ ইচ্ছে' মেটাতে সুদূর সুইজারল্যান্ড থেকে এই দেশে আসেন।  মেয়ের ইচ্ছে যে সে একবার কলকাতার দুর্গা পুজো দেখে কিন্তু বাবা কখনোই মেয়ের সেই সাধ মেটাতে তেমন একটা গা করেননি। কিন্তু আর দেরি করা চলবে না দেখে তিনি কলকাতায় এসে অনেকের সাহায্যে একটা নকল দুর্গাপুজোর আয়োজন করেন।

এখানে দেখানো হয়েছে যে উমা যখন খুব ছোট ছিল, তখনই তার বাবা-মায়র মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। কিন্তু বাবা সব কাজ উপেক্ষা করে নিজের ছোট্ট মেয়েটার সাধ পূরণ করতে এখানে চলে আসেন।

অন্যান্য অভিনেতা ও অভিনেত্রীদের অভিনয় মন কাড়ার মতো। তবে সিনেমায় অভিনেতা অঞ্জন দত্ত একজন পরিচালকের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। এই চরিত্রটির একটি না পাওয়ার মনস্তাত্বিক দিক রয়েছে যেটা অঞ্জন দত্তের মতো একজন দক্ষ অভিনেতার অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে। পরিচালক তাঁর ছেলের ইচ্ছেটা কখনও পূরণ করে উঠতে পারেননি। তাই উমার বাবা যখন উমার শেষ ইচ্ছেটা পূর্ণ করার জন্য অঞ্জন দত্তের কাছে সাহায্য চান তখন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন এটা ভেবে যে আর একজন বাবার সেই ইচ্ছের মধ্যে দিয়ে অঞ্জন দত্ত নিজের ছেলের ইচ্ছেটাই যেন পূরণ করতে পারবেন। তিনি কোনও দিনও নিজের ছেলেকে বলে পারেননি যে সে তাঁর ছেলেকে ঠিক কতখানি ভালোবাসেন।

u_body_061118031601.jpgছবিতে বাবা-মেয়ের চরিত্রে যিশু সেনগুপ্ত ও সারা সেনগুপ্ত

যদিও ছবিটির মধ্যে কোথাও কোথাও সূক্ষ্মভাবে সাম্প্রদায়িকতার ছোঁয়া থাকলেও সিনেমা জুড়ে ঈশ্বরের আশীর্বাদের প্রচ্ছন্ন উপস্থিতি অনুভূত হয়েছে দর্শকের। সিনেমার চরিত্রগুলো যখনই কোনও না কোনও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তখনই ঈশ্বরের আশীর্বাদের মতো সব সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে।

মোটের উপর এই ছবিটা দেখে আমার মনে হল যে যদিও বাবা-মাকে আমরা ভগবানের সঙ্গেই তুলনা করে থাকি কিন্তু তবুও সর্বমঙ্গলময় ঈশ্বরের হাত রয়েছে সবকিছুর পেছনেই। তবে নিজেকে সব সময় ঠিক পথে থাকতে হবে তা হলেই সব রকম সমস্যার থেকে রেহাই পাওয়া যায়।

সন্তান হারাবার কষ্টটা ঠিক কতখানি গভীর ও চিরস্থায়ী হতে পারে  সেটাও এখানে উঠে এসেছে। পাশাপাশি একজন বাবা তাঁর মেয়ের শেষ ইচ্ছেটা মেটাবার জন্য যে তাঁর সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করতে পারেন তাও অতন্ত্য আবেগের মাধ্যমে দেখিয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। 

If you have a story that looks suspicious, please share with us at factcheck@intoday.com or send us a message on the WhatsApp number 73 7000 7000

Writer

ANARGHA CHOWDHURY ANARGHA CHOWDHURY

OWNER OF JEWELLERY STORE CHAIN | FILM BUFF

Comment